রাগ মানুষের আবেগের অন্যতম এক স্বতঃস্ফূর্ত উপাদান। একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের এই অনুভূতিটি সবল।
রাগ কী:
রাগ এক ধরনের আবেগীয় বহিঃপ্রকাশ যা ব্যক্তির মনের অসহনীয় অবস্থা বা বিরক্তিবোধ থেকে উৎপত্তি হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন কোনো ব্যক্তি রেগে যান তখন তার দেহে অ্যাড্রিনালিন ও নর-অ্যাড্রিনালিন হরমোন নিঃসৃত হয়। একইসঙ্গে হৃৎপিণ্ডের গতি ও রক্তচাপ বেড়ে যায়।
রাগ ও ক্ষোভ এক নয়:
রাগ ও ক্ষোভ দুটো এক নয়। তৎক্ষণাৎ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যক্তির সাময়িক বহিঃপ্রকাশ হলো রাগ। এর সময়কাল স্বল্পকালীন।
অন্যদিকে ক্ষোভ দীর্ঘদিন পুষে রাখা রাগের ফলাফল। ক্ষোভে ব্যক্তির আক্রমণাত্মক ভূমিকা থাকে।
যুক্তিতেই শক্তি:
রাগ মনের ভেতর পুষে রাখবেন না। এটি শারীরিক ও মানসিক উভয় স্বাস্থ্যের জন্য হানিকর। অন্যায় মেনে নেবেন না, প্রতিবাদ করুন। তবে তা গ্রহণযোগ্য ভঙ্গিতে। আপনি কী চান, যা আশা করছেন অথবা কী হওয়া উচিত ছিল তা পরিষ্কার সাবলীল ভাষায় অন্যকে বুঝিয়ে বলুন ও এর পরিপ্রেক্ষিতে আপনার যথাযথ যুক্তি দেখান। ইতিবাচক ভঙ্গিতেই আপনার দাবি ও পাওনা আদায় করুন।
ওম শান্তি:
যদি কোনো বিষয় আপনাকে উত্তেজিত করে তখন সময় নিন। কিছুক্ষণের জন্য সে বিষয়টি নিয়ে ভাবা বন্ধ করুন। হয়তো ব্যাপারটি মাথায় বারবারই ঘুরপাক খাবে। তবে বিরক্ত হবেন না। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের ইতিবাচক দিকগুলোর কথা ভাবুন। রাগের ফলে আপনার শরীরের ক্ষতি হচ্ছে ও আপনার বিষণ্ণতা বাড়ছে সেটাও মাথায় রাখুন। রাগকে ভাঙুন নতুন কিছু গড়ুন, যা আপনার জন্য ইতিবাচক।
অটোসাজেশন:
নিজেই নিজেকে বলুন, ‘আমি উত্তেজিত হবো না, শান্ত থাকবো ও ইতিবাচক আচরণ করবো’। কোনোকিছু না পাওয়া, হারিয়ে যাওয়া অথবা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় যদি রাগ হয় তাহলে নিজেই ভাবুন, হারিয়ে যাওয়া বা না পাওয়া জিনিসটি আপনার বর্তমান ও ভবিষ্যত জীবনে কতটুকু গুরুত্ব রাখে। অন্যদিকে হিসেব করুন বস্তুটির অবর্তমানে আপনি কী কী উপায়ে সমস্যার সমাধান করতে পারেন। বিশ্বাস করতে চেষ্টা করুন রাগ নয়, আপনার বুদ্ধিই আপনাকে লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে।
সুসম্পর্ক বজায় রাখুন:
কারো কথায় রাগ হলে তার কথার মাঝেই রেগে গিয়ে কিছু বলবেন না। অন্য ব্যক্তি যা বলছে তা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। মনে রাখবেন, উত্তম বক্তা হওয়ার চেয়ে উত্তম শ্রোতা হওয়া বেশী জরুরি। এটি স্বাভাবিক, কেউ যদি আপনার বিষয়ে ভুল তথ্য দিলে বা সমালোচনা করলে রাগ হতেই পারে। তবে সেটিকেও বিনম্রভাবে সামাল দিন। কারণ, আপনার সুন্দর আচরণই বলে দেবে আপনি সত্যিই কতটা স্বচ্ছ ও ব্যক্তিত্ববান।
খাদ্যাভ্যাস:
দৈনন্দিন খাদ্যাভাস আমাদের আচরণের উপর বেশ প্রভাব ফেলে। আসুন কয়েকটি বিষয় জেনে নেওয়া যাক। কিছু খাবার যেমন- সফট ড্রিঙ্কস, অ্যালকোহল ও তামাক মানসিক উত্তেজনা তৈরি করে। এসব বর্জন করুন। প্রতিদিন টকদই খেতে পারেন। এছাড়াও মিষ্টি খাবার যেমন- ডার্ক চকলেট ও কফি খাওয়া যেতে পারে। প্রচুর পানি পান করুন। টক ও লবণাক্ত খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। অতঃপর ভালো থাকুন। ভালোবাসুন নিজেকে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২২
এএটি