বরিশাল: সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বরিশাল সার্কেল অফিসের আনসার সদস্যদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছেন সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) এম ডি শাহ্ আলম।
আর এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন দুইপক্ষই।
জানা গেছে,অনিয়ম এবং দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় বিআরটিএ দপ্তর থেকে সম্প্রতি একজন আনসার কমান্ডারকে অপসারণ করা হয়েছে। সেখানে পদায়ন দেওয়া হয়েছে অপর একজন আনসার কমান্ডারকে।
আর এ ঘটনার পরই বিআরটিএ কার্যালয়ে নতুন যোগদান করা আনসার সদস্য এবং বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালকের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।
গত মঙ্গলবার আনসার কমান্ডার এবং সহকারী পরিচালকের মধ্যে বাকবিতণ্ডাও ঘটে।
এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিআরটিএ বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. জিয়াউর রহমান।
বিআরটিএ বরিশাল জেলা কার্যালয়ে আনসার বাহিনীর বর্তমান প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) মো. হুমায়ুন কবির জানান, বিআরটিএ বিভাগীয় কার্যালয় থেকে তাদের জেলা কার্যালয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের দায়িত্ব গ্রহণের বিষয়টি মানতে নারাজ সহকারী পরিচালক এমডি শাহ্ আলম। তিনি আনসারদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য জেলা আনসার ভিডিপি এবং বিআরটিএ চেয়ারম্যানের দপ্তরে চিঠি দেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দপ্তর থেকে আমরা যোগদানের আদেশ পেলেও প্রত্যাহারের কোন আদেশ আমরা পাইনি। তাই আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। কিন্তু সহকারী পরিচালক স্যার গত তিন মাস ধরে আমাদের সঙ্গে যাচ্ছেতাই ব্যবহার
করছেন। সবশেষ গত মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে হঠাৎ করেই তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। আমাদের কাছে যোগদানপত্র চাইলে সেটি না দেওয়ায় আমাকে কার্যালয় থেকে বের করে দেন তিনি। ওইসময় অকথ্য ভাষায় গালাগালও করেন।
যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শাহ্ আলম।
এ সহকারী পরিচালকজানান, জেলা কার্যালয়ে পাঁচজন আনসার সদস্য রয়েছেন। এদের মধ্যে একজন পুরোনো কিন্তু বাকি চারজন কোথা থেকে কীভাবে এখানে আসলো? কোন আদেশের বলে তারা এখানে দায়িত্ব পালন করছে সেটা আদৌ আমি জানি না। আর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এখানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে আনসার সদস্যদের দিয়ে সরকারের অর্থ অপচয়ের কোন যুক্তি নেই। এসব কারণে আমি তাদের অপসারণের জন্য বিআরটিএ চেয়ারম্যান এবং জেলা আনসার কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছি। এজন্য ওই আনসার সদস্যরা আমার ওপরে ক্ষুব্ধ।
তার দাবি মঙ্গলবার অফিসে প্রবেশ করা মাত্রই আনসার সদস্যরা তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করে এবং হুমকি দেয়। অথচ এখন তার বিরুদ্ধেই মিথ্যাচার করা হচ্ছে। অফিসে আমার নামে কোন বদনাম থেকে থাকলে এর উৎস আনসার সদস্য। আর এ অফিসে যে স্টাফ রয়েছেন তারা নিবেদিতভাবে গ্রাহক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এখানে আনসার সদস্যদের প্রয়োজন নেই।
এ প্রসঙ্গে বিআরটিএ বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক মো. জিয়াউর রহমান বলেন,আনসার সদস্যদের সঙ্গে কি হয়েছে সেটা দুই পক্ষের সঙ্গে কথা না বলে এবং তদন্ত না করে স্পষ্টভাবে বলা সম্ভব না। আর জেলার সহকারী পরিচালক আমাকে এ বিষয়ে কিছু জানায়নি। তবে আনসার কমান্ডার আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে। ঘটনা কি ঘটেছে সেটা জানার জন্য উপ-পরিচালককে সেখানে পাঠিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তাছাড়া কার্যালয়ে থাকা সিসি ক্যামেরাও পর্যালোচনা করে দেখা হবে।
বিআরটিএ জেলা কার্যালয়ে দুর্নীতির অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন,অনিয়মের অভিযোগ আমার কাছেও এসেছে। বরিশাল জেলা কার্যালয় থেকে পিকআপ এবং মিনি ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনকে দেয়া ২৫৫টি রেজিস্ট্রেশন আমাদের কাছে
অসঙ্গতিপূর্ণ মনে হয়েছে। তাই এগুলো পর্যবেক্ষণ এবং ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চেয়ারম্যান স্যারের কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই ঘটনায় বিআরটিএ চেয়ারম্যান স্যারের কার্যালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা যেকোন সময় বরিশালে আসতে পারেন। তারাই তদন্ত করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২২
এসএম/এসএএইচ