ঢাকা: রাজধানীতে বিএনপি বিভাগীয় গণসমাবেশ উপলক্ষে সকাল থেকেই রাস্তায় গণপরিবহনের চলাচল একেবারেই সিমিত। অফিসগামী যাত্রী থাকলেও গণপরিবহন একেবারে নেই বললেই হয়।
বিএনপির অন্য সব বিভাগীয় সমাবেশের মতো ঢাকায় গণপরিবহন বন্ধের কোনো ঘোষণা নেই। বেশ কিছু বাস চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে আগের দিন রাতেই মালিক পক্ষ পরিবহন চালাতে নিষেধ করেছেন। যে কারণে সাধারণ মানুষ ভোগান্তি এড়াতে গণপরিবহনে বিকল্প পন্থা খুজছে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য।
শরিবান (১০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, মগবাজার, মহাখালী এবং পল্টন এলাকা ঘুরে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তির এমন চিত্র দেখা গেছে।
ঢাকা মেট্রো ব-১১৯৩০৯ সিরিয়ালের ভিক্টর ক্লাসিকের ড্রাইভার সুজন মিয়া। প্রতিদিন তিনি গাড়ি রামপুরা ব্রিজ হয়ে সদরঘাট পর্যন্ত যান। তবে আজ রামপুরা ব্রিজ থেকে গাড় ঘুরিয়ে ফেলেন। গুলিস্তানের দিকে তিনি যাবেন না। শুধু মাত্র গাড়িতে তেল ভরার জন্য রাস্তায় নেমেছে। বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের বিভাগীয় সমাবেশের কারণে মালিক পক্ষের থেকে নিষেধ আছে গাড়ি না চালানোর। গাড়ি উত্তরা ফিরে যাবে, তাই খালি নাগিয়ে রামপুরা ব্রিজথেকে উত্তরার উদ্দেশ্য কিছু যাত্রী তুলে নেন। সুজন মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি বাংলানিউজ ২৪ ডট কম কে বলেন, গত কাল রাতেই মালিকরা সব বাস ড্রাইভারদের বলে দিয়েছে গাড়ি না চালানোর জন্য। আমাদের ভিক্টরের সব বন্ধ কোন ভেক্টর আজকে গুলিস্তানের দিকে যাচ্ছে না। আমার পরিচিত অন্য যেই বাস কোম্পানিগুলো আছে তাদের সাথে কথা বললাম সকালে, তারাও কেউ আজকে রাস্তায় গাড়ি চালাতে নামবে না।
মাইদুল ইসলাম সিএনজি চালক উত্তরা আবদুল্লাহ পুর ১০০ টাকা করে ভাড়া চাচ্ছে রামপুরা ব্রিজ থেকে। তিনি ভোর চারটায় বাসা থেকে সিএনজি গাড়ি নিয়ে বের হন। সকাল থেকে বেশ কিছু রাস্তা বন্ধ থাকায় কম পাচ্ছিল। তাই তিনি রামপুরা ব্রিজ থেকে উত্তরার উদ্দেশ্যে জনপ্রতি ১০০ টাকা করে যাত্রী ডাকছেন। রাস্তায় কোন ধরনের সমস্যা দেখেছে কি না জানতে চাইলে মাইদুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে একটা সমস্যায় পড়ছি রাস্তাঘাট বন্ধ। সকালে গুলিস্তান গিয়েছিলাম গাড়ি ঢুকতে দেয় নাই। পরে এখন রামপুরা ব্রিজে এলাম।
গণপরিবহন না পেয়ে এক যাত্রী অন্য যাত্রীর সঙ্গে শেয়ার করে সিএনজি বা রিক্সায় করে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন।
এমনই একজন যাত্রী কাপড়ের ব্যবসায়ী কাজী আবিরের সঙ্গে কথা হয়। তিনি ইসলামপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে সকাল ৭ টায় বাসে করে নতুন বাজার থেকে রওনা হন। কিন্তু রামপুরা ব্রিজে এসে তার বাস ঘুরিয়ে ফেলে। প্রায় দুই ঘণ্টা রামপুরা ব্রিজে অপেক্ষা করেন। গণপরিবহন না পেয়ে তিনি সিএনজিতে করে ৫০ টাকার বিনিময়ে নতুন বাজার বাসায় ফিরে যান। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আজকে সমাবেশ দেখে সকাল সকাল বাসা থেকে বের হলাম। কিন্তু মাঝ পথে এসে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে আর যেতে পারলাম না। অফিসে ফোন দিয়ে বুঝিয়ে বলেছি যে আসতে পারছি না।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২২
ইএসএস/এসআইএস