ঢাকা, সোমবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ জুন ২০২৪, ০৯ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

বিজয়ের আনন্দ-উল্লাসে রঙিন ঢাবি ক্যাম্পাস

সাজ্জাদুল কবির, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২২
বিজয়ের আনন্দ-উল্লাসে রঙিন ঢাবি ক্যাম্পাস

ঢাবি: দেশভাগ পরবর্তী পাকিস্তানি হানাদারদের শোষণ-নিপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছিল এ বাংলার মানুষ। দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ আর ৩০ লাখ রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় বাংলার স্বাধীনতা।

পৃথিবীর মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দিক নির্দেশনায় আপামর জনতা ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতার লাল সূর্য। পরাধীনতার শৃঙ্খল পেরিয়ে মুক্তির স্বাদ স্বভাবতই আনন্দের। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে শুরু হয় বিজয় উদ্যাপন।

স্বাধীনতা সংগ্রাম কিংবা মুক্তিযুদ্ধ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষারথী-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আত্মত্যাগ করেছেন দেশের টানে। বিজয়ের প্রাক্কালে বাছাই করে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পণ্ডিত শিক্ষকদের হত্যা করে পাকিস্তানি ঘাতকরা। বহু প্রাণ, রক্ত্ ত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত এ স্বাধীনতার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে প্রতিবারের ন্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করে ব্যাপক কর্মসূচি।

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন বয়সী মানুষের সমাগমে সব আয়োজন হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। পরিবার পরিজনের সঙ্গে এসেছেন সাবেক শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন আয়োজনে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে লাল-সবুজের সৌন্দর্য্য। শাড়ি কিংবা পাঞ্জাবিতে বিরাজ করছে বিজেযর সাজ। নারী-পুরুষের পাশাপাশি ছোট্ট শিশুরাও তাদের হাত কিংবা গালে রংতুলির দিয়ে লিখেছে ‘বিজয় দিবস-২০২২’। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, কার্জন হলে ছিল বেশি ভিড়। রাজধানীর খিলগাও থেকে এসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী লুতফুর হাসান।  

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে যাওয়ার পরে নিজের ক্যাম্পাসে আসার সুযোগ খুব একটা পায় না। আজকে ছুটির দিন তার ওপরে বিজয়ের আনন্দতো আছেই। তাই এমন দিনে ক্যাম্পাসে সুযোগ মিস করি নি।  

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহেদীন আলম বলেন, আজকের এই দিনটি আমাদের সবার জন্য বিশেষ একটা দিন। বন্ধু বান্ধবরা সবাই একসঙ্গে বের হয়েছি যাতে এই বিশেষ দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে পারি।

বিজয় দিবসের যত আয়োজন 

ঢাবি কর্তৃপক্ষ যথাযথ মর্যাদায় বিজয় দিবস উদ্যাপনের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি নেয়। তারই অংশ হিসেবে ভোরে উপাচার্য ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভবনসমূহে উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীনের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। টিএসসিতে ‘বাঁধন'-এর উদ্যোগে আয়োজন করা হয় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি।  

বিকেলে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ঢাবি ও ছায়ানটের যৌথ উদ্যোগে সঙ্গীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলের ব্যবস্থাপনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পর্কিত প্রামাণ্যচিত্র, তথ্যচিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।  

দিবসটি উপলক্ষ্যে বাদ জুমা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিয়াসহ বিভিন্ন হল এবং আবাসিক এলাকার মসজিদে শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য দোয়া করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য উপাসনালয়ে শহিদদের আত্মার শান্তি কামনা করে প্রার্থনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।  

অন্যদিকে, বাংলা একাডেমির উদ্যোগে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিজয় মেলা ২০২২। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছে চারদিন ব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান " বিজয় উৎসব ২০২২"।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২২
এসকেবি/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।