ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সোনাগাজীতে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনায় আটক ২

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২৩
সোনাগাজীতে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনায় আটক ২

ফেনী: ফেনীর সোনাগাজীতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে স্বর্ণ দোকানে ডাকাতির পর ব্যবসায়ী (স্বর্ণ) অর্জুন চন্দ্র ভাদুড়ী (৫৭) হত্যার রহস্য অবশেষে বেরিয়ে আসছে। আলোচিত এ হত্যাকাণ্ড ও ডাকাতির ঘটনায় জড়িত দুইজনকে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা থেকে আটকও করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) সদস্যরা।

 

শনিবার (৭ জানুয়ারি) বিকেল এ তথ্য নিশ্চিত করে র‌্যাব।  

আটকরা হলেন- মো. রাকিব (২০) ও মো. আয়নাল মাল (৩২)। এ ঘটনায় ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়েছে।  

র‍্যাব সূত্র জানায়, সোনাগাজী থানা পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে গত ৩০ ডিসেম্বর রাতে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া টিকিকাটা বেসকী গ্রামের মো. আলতাফ হাওলাদারের ছেলে মো. জাফর হাওলাদারকে (২৮) শনাক্ত করে।   ডাকাতিকালে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিসহ তাকে আটক করা হয়। পরে জাফরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।  একপর্যায়ে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন তিনি। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্য ডাকাতদের গ্রেফতারের জন্য র‌্যাবের সহায়তা চায় সোনগাজী থানা পুলিশ।

শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) দিনগত রাত ৩টার দিকে র‌্যাব-৭ ও ৮ এর একটি যৌথ দল মঠবাড়িয়া থানার চরদুয়ানী বাজার এলাকা থেকে রাকিব  ও আয়নালকে আটক করা হয়। আটকের সময় রাকিবের কাছ থেকে ডাকাতিকালে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।  

র‍্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার জানান, আটকরা ডাকাতি ও খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। পরে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে তাদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদ হোসেন দাইয়ান জানান, গ্রেফতারদের আদালতে পাঠানো হবে।

প্রসঙ্গত, ড়ত ৩০ অক্টোবর দুপুরে উপজেলার জমাদার বাজারে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে অর্জুন জুয়েলার্স দোকানের মালিক অর্জুন চন্দ্র ভাদুড়িকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে দোকানের শোকেস ভেঙে ও লকার খুলে ৪০ ভরি স্বর্ণালংকারসহ অর্ধকোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় ডাকাতরা।

মোটরসাইকেলে আসা চার সদস্যের ডাকাতদের ছোড়া বোমার আঘাতে কয়েকজন পথচারী আহত হন। দুইটি মোটরসাইকেল করে আসা চারজন ডাকাতের দুইজন হেলমেট পরা ও দুইজন মুখোশ পরা ছিল। তাদের বয়স আনুমানিক ২০-৩৫ বছর হবে। ডাকাতের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত অর্জুন ভাদুড়িকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে ওইদিন রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল হয়ে চট্টগ্রামের অ্যাপোলো ইমপেরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ ১১দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় অর্জুন ভাদুড়ি মারা যান। ঘটনার দুইদিন পর আহত অর্জুন ভাদুড়ির জামাতা রনি বনিক বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় একটি মামলা করেন।  

পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সিরাজুল ইসলাম (৪৮), মো. মোস্তফা (৫০) ও বেলাল হোসেনকে (২৮) গ্রেফতার করে। তারা উপজেলার চর দরবেশ ইউনিয়নের চর সাহাভিকারী এলাকার বাসিন্দা। কিন্তু রিমান্ডে নিয়েও তাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য পায়নি পুলিশ।

সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে ডাকাতদের ছবি ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে তাদের সন্ধান চাওয়াসহ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতারে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযানও চালায় পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২৩
এসএম/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।