ঢাকা: সরকারের মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে আগামীকাল ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে ভার্চ্যুয়ালি মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর রমনায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের সরকারি বাসভবনে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী নিজেই। দ্বিতীয় পর্যায়ের ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন উপলক্ষে এ প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
প্রেস বিফিংয়ের লিখিত বক্তব্যে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ইসলামি মূল্যবোধের উন্নয়ন এবং ইসলামি সংস্কৃতি বিকাশের উদ্দেশ্যে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো সরকার দেশীয় অর্থায়নে একসঙ্গে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন করতে যাচ্ছে। আগামীকাল দ্বিতীয় পর্যায়ের ৫০টি মডেল মসজিদের উদ্বোধন করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষাধিক মসজিদ রয়েছে। এসব মসজিদের সিংহভাগই স্থানীয় জনগণের আর্থিক সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আধুনিক সুবিধাসম্বলিত দৃষ্টিনন্দন মসজিদ বা ইসলামি স্থাপনা নেই বললেই চলে। এ সব বিবেচনায় বর্তমান সরকার ইসলামি মূল্যবোধের উন্নয়ন এবং ইসলামি সংস্কৃতি বিকাশের উদ্দেশ্যে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।
যেসব জেলা উপজেলায় দ্বিতীয় পর্যায়ের মসজিদ উদ্বোধন হবে- জামালপুরের জেলা সদর, বকশীগঞ্জ, মেলান্দহ, সরিষাবাড়ী, মাদারগঞ্জ-এ ৫টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে। ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও নগরকান্দা, গাজীপুরের কাপাসিয়া, গোপালগঞ্জ সদর, কিশোরগঞ্জ সদর ও কটিয়াদী, মানিকগঞ্জের ঘিওর ও সাটুরিয়া, নরসিংদী সদর ও মনোহরদী, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ, শরিয়তপুরের জেলা সদর ও ভেদরগঞ্জ, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, রাজশাহী সদর উপজেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা, বগুড়ার ধুনট, বগুড়া ও নন্দিগ্রাম, নওগাঁর নিয়ামতপুর, নাটোরের বড়াইগ্রাম, পাবনার ভাঙ্গুড়া ও সুজানগর, সিরাজগঞ্জের কাজীপুর, রংপুরের গংগাচড়া ও কাউনিয়া, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা, শেরপুর সদর উপজেলা, ভোলার লালমোহন ও তজুমদ্দিন, পিরোজপুর জেলা সদর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও কসবা, খাগড়াছড়ি সদর ও মানিকছড়ি, মেহেরপুর সদর ও গাংনী, সাতক্ষীরার দেবহাটা, সিলেটের গোয়াইনঘাট, সুনামগঞ্জ সদর ও জগন্নাথপুর, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট, কুমিল্লার চান্দিনা ও চৌদ্দগ্রাম, কুষ্টিয়ার খোকসা ও ভেড়ামারা এবং খুলনার রূপসায় বাকি ৪৬টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হবে।
নির্মিত প্রতিটি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ৪৩ শতাংশ জায়গার ওপর তিন ক্যাটাগরিতে নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে জেলা ও সিটি করপোরেশন পর্যায়ে ৪ তলা, উপজেলা পর্যায়ে ৩ তলা এবং উপকূলীয় এলাকায় ৪ তলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ক্যাটাগরিতে ৬৪টি জেলা শহর ও ৩টি সিটি করপোরেশনে ৫টিসহ মোট ৬৯টি চারতলা বিশিষ্ঠ মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। বি-ক্যাটাগরিতে উপজেলা পর্যায়ে ৪৭৯টি (নবগঠিত ৪টি উপজেলাসহ) এবং সি-ক্যাটাগরিতে উপকূলীয় এলাকায় চারতলা বিশিষ্ট (নীচতলা ফাঁকা থাকবে) ১৬টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। মসজিদগুলোতে নারী ও পুরুষদের জন্য পৃথক অজু ও নামাজ কক্ষ, ইমাম প্রশিক্ষণকেন্দ্র, হেফজখানা, গণশিক্ষা কেন্দ্র, গবেষণাকেন্দ্র, পাঠাগার, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের নির্দেশনা দেন। এরপর মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ১০ জুন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২৩
এসআর/এসএ