পাবনা (ঈশ্বরদী): বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় রেলের আওতায় সবচাইতে সর্ববৃহৎ ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন। স্টেশনটি ৪০০ ফুট দৈর্ঘ্যের ফুট ওভারব্রিজটি ব্রিটিশ আমলে নির্মিত।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঈশ্বরদী জংশনে স্টেশনে উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন রেলপথ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সেতু প্রকৌশলী আব্দুর রহিম সদ্য সমাপ্ত নির্মাণকাজ পরিদর্শনকালে বাংলানিউজকে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শতবর্ষের ফুট ওভারব্রিজটি পুরোনো ঝুঁকিপূর্ণ ও জড়াজীর্ণ হওয়ায় সরকারের দেশীয় অর্থায়নে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন ফুট ওভারব্রিজ পুনঃনির্মাণ করেছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের সেতু প্রকৌশলী বিভাগ।
শতবর্ষের পুরোনো ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশনের এ ফুট ওভারব্রীজ দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ২৫টি গ্রামের মানুষ থেকে শুরু করে ঈশ্বরদী রেল স্টেশনে আসা ১৮ জোড়া ট্রেনের মানুষ পারাপার হয়। এছাড়াও প্রাচীন আমলের ঈশ্বরদীর ঐহিত্যবাহী দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন চলাচল করে।
মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পুরোনো ফুট ওভারব্রিজে স্লাবগুলো সবই ভাঙা! মানুষ পারাপারের জন্য পাটাতন ভেঙ্গে ভেঙ্গে গিয়েছে। ব্রিজের পুরোনো লোহা, যন্ত্রাংশ লোহার খাঁচা ও চালা, জয়েন্টে মরিচাও ধরেছে।
ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ব্রিজ) হাসান আলী বাংলানিউজকে জানান, এখন যে ফুট ওভারব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে এটা দৃষ্টিনন্দন। আমরা আরসিসি পাটাতনের পরিবর্তে ফুট ওভারব্রিজে উপরের অংশে চেকার প্লেট ব্যবহার করেছি। ফলে আগে যে স্লাব ব্যবহার করতাম, তা ভেঙ্গে মানুষের চলাচল অনেকটা বাধাগ্রস্ত হতো। সেটি আর হবে না। ব্রিজটি চালু হওয়ার পর মানুষের যাতাযাত নিরাপদ ও আরামদায়ক হবে। স্বাচ্ছন্দ্যে ট্রেনযাত্রী ও পথচারী চলাফেরা করতে পারবে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় সেতু প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে জানান, ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সব চাইতে সর্ববৃহৎ স্টেশন। এ জংশন স্টেশনে আগে যে ফুট- ওভারব্রিজটি ছিল, সেটি শতবর্ষের ব্রিটিশ আমলে নির্মিত। এটি অকার্যকর ও জড়াজীর্ণ হওয়ায় পাশ্ববর্তী আমরা আরও একটি নতুন ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করি। ২০২১ সালে কাজ শুরু হয়ে কাজটি শেষ হয়।
সেতু প্রকৌশলী আব্দুর রহিম আরও জানান, ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের পুরোনা ওভারব্রিজ দিয়ে দুই প্রান্তের শতশত ট্রেন যাত্রী, সাধারণ মানুষ পারাপার হয়। ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে মানুষের চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। বর্তমান সরকার যে লক্ষ্য নিয়ে মানুষের সেবাকে উন্নততর করছে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ঈশ্বরদী ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হলো।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ বাংলানিউজকে জানান, রেল বান্ধব সরকার রেলওয়েতে দৃশ্যমান উন্নয়ন করছেন। ঈশ্বরদী স্টেশনে নবনির্মিত ফুট ওভারব্রিজ দিয়ে দুইপাশের লোকজন চলাচল থেকে শুরু করে স্টেশনের দুটি প্লাটফর্মের যাত্রীদের যাতায়াতকে আরও সুগম করবে।
উল্লেখ্য, ১৯১৫ সালে ঈশ্বরদীর পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজটি নির্মাণ করার পর উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ঈশ্বরদীর রেলযোগাযোগ সচল হয়। ১৯২৩ সালে বৃিটিশ আমলে ঈশ্বরদী ফুট ওভারব্রিজটি নির্মাণ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩
এসএম