ফরিদপুর: ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ শাখার ছাত্রলীগ সভাপতি মাশতুরা মোশাররফ ঐশিকার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই মেডিকেল কলেজের ৫ম বর্ষের ছাত্র মাইনুল এনছান মাহির ও সাবেক ছাত্র জুনেদ আহমেদ ।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় ফরিদপুর প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাইনুল এনছান মাহির বলেন, গত ১৩ এপ্রিল ইভটিজিংয়ের অভিযোগে আমাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু ইভটিজিংয়ের অভিযোগটি ছিল মিথ্যা। কলেজ শাখার সভাপতি মাশতুর মোশাররফ ঐশিকার নানান অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঐশিকা নানাভাবে আমাকে হেনস্তা করে আসছেন। তিনি আমার প্রোগ্রামের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছেন। মারামারির একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাকে আটকের জন্য পুলিশ পাঠান তিনি। আমার সঙ্গে যাদের সম্পর্ক রয়েছে ঐশিকা ও তার সহযোগীরা তাদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করছেন।
কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী (বর্তমানে কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ) জুনেদ আহমেদ জানান, প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ থেকে অন্যায়ভাবে সরিয়ে দেন ঐশিকা।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ওপর দুইবার হামলা চালানো হয়। তারা আমাকে রুমে আটকে রেখে নারকীয় তাণ্ডব চালায়। ঐশিকা ও তার সহযোগীরা আমাকে এবং আমার বান্ধবীকে (সহপাঠী) অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। বিষয়টি নিয়ে কলেজ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। আমাকে অন্যায়ভাবে মাইগ্রেশন দেয় তারা। আমার একটাই অপরাধ, তা হলো ঐশিকার অন্যায়, অসঙ্গতির বিরুদ্ধে কথা বলা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করে বলা হয়, ঐশিকা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রেখে অবৈধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই তা মুখ বুজে সহ্য করতে বাধ্য হচ্ছেন।
ঐশিকার নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয় সেখানে।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করেছেন ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মাশতুর মোশাররফ ঐশিকা।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মাহির যে কাজ করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য। সে কলেজের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করে; তার প্রমাণস্বরুপ একটি সিসিটিভির ফুটেজ ভিডিও আমাদের কাছে আছে। এ বিষয়টি নিয়ে ওই ছাত্রী কলেজের অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি আমাদের নজরে আসলে আমরা কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কেন্দ্র তাকে সাময়িক বহিষ্কার করার কথা বলেছে।
তিনি আরও বলেন, বহিষ্কৃত মাহির একজন নেশাগ্রস্ত। সে বিভিন্ন সময়ে নেশা করে নানা অপরাধ করে আসছে। এছাড়া সে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কোনো প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে না। ছাত্রলীগে নিষ্ক্রিয়। তাই কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ঐশিকা আরও বলেন, জুনেদ যে অভিযোগ তুলেছেন সেটাও ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। তার মাইগ্রেশনের বিষয়ে আমি জড়িত নই। সেটা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২৩
এসএএইচ