ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শনিবার হারিকেনের গতি পাবে মোখা, কমবে স্থলভাগে

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৩ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৩
শনিবার হারিকেনের গতি পাবে মোখা, কমবে স্থলভাগে

ঢাকা: দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে আবহাওয়ার গাণিতিক মডেল অনুযায়ীই এগোচ্ছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা। আরও শক্তি সঞ্চয় করে শনিবার (১৩ মে) সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে এটি।

এ সময় ঝড়ের কেন্দ্রে সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ২১০ কিলোমিটার পর্যন্ত, যা হারিকেনের গতিসম্পন্ন।

বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঝড়টি কক্সবাজার ও মিয়ানমারে কিয়াকপিউ বন্দরে মাঝ দিয়ে স্থলভাগে উঠে আসবে রোববার (১৩ মে) দুপুরের দিকে। সে সময়ও অতি প্রবল ঝড়ের গতি নিয়ে আঘাত হানবে মোখা।

উত্তর ভারত সাগরে সৃষ্ট হওয়া ঘূর্ণিঝড় পর্যবেক্ষণ সংস্থা আঞ্চলিক বিশেষায়িত আবহাওয়া বিষয়ক কেন্দ্রও (আরএসএমসি) একই তথ্য জানিয়েছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতরও এই সংস্থার সদস্য।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরাধীন নয়াদিল্লি ভিত্তিক এই কেন্দ্রের আবহাওয়া বিজ্ঞানী আনন্দ কুমার দাশ জানিয়েছেন, শুক্রবার (১২ মে) দুপুর আড়াইটা থেকে আগের ছয় ঘণ্টা ১৩ কিলোমিটার বেগে দক্ষিণ-পূর্বদিকে এগোচ্ছিল। এ সময় এটির গতিবেগ উঠে যাচ্ছিল ১৬৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। রাতেই এটি আরও বেড়ে ১৮৫ কিলোমিটারে উঠতে পারে। আর শনিবার দুপুরের মধ্যেই এটির গতি ২১০ কিলোমিটার উঠে যেতে পারে।

রোববার দুপুরের দিকে উপকূলে ওঠার সময় মোখার কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। এরপর ধীরে ধীরে আরও শক্তিক্ষয় করে সোমবার দুর্বল হয়ে যেতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলে দুই থেকে আড়াই মিটার উঁচু জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। আবহাওয়াবিদ গোলাম রব্বানী জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের ডান দিকে জলোচ্ছ্বাস বড় হওয়ার কারণে দেশের উপকূলের চেয়ে মিয়ানমারে ক্ষতি হতে পারে বেশি।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের সন্নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ২ (দুই) নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারী সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিদ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।

চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেতের মানে হচ্ছে, বন্দর ঘূর্ণিঝড় কবলিত। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় এখনো আসেনি।

ঘূর্ণিঝড় মোখা নামটি ইয়েমেনের দেওয়া। কফির জন্য বিখ্যাত স্থানীয় একটি বন্দরের নাম মোখা। কালক্রমে সেখানকার কফির নামকরণও করা হয়েছে ‘মোখা’। ইংরেজিতে শব্দটি Mocha লেখা হলেও এর উচ্চারণ হচ্ছে Mokha।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপ (escap) আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়ার ঘূর্ণিঝড়গুলোর নাম ঠিক করে। এক্ষেত্রে এসকাপ সদস্যভূক্ত ১৩টি দেশের দেওয়ার নামের তালিকা থেকে পর্যাক্রমে এক একটি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়। বর্তমানে যে তালিকা রয়েছে সেখানে ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া রয়েছে। এর মধ্যে মোখা নামটি ১৩ নম্বর। অর্থাৎ ওই তালিকা থেকে পরবর্তী ১৫৬ ঝড়ের নাম ঠিক করা হবে।

আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখা: জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতির শঙ্কা কম

কক্সবাজার-কিয়াকপিউ বন্দরের মাঝ দিয়ে উপকূলে উঠতে পারে ‘মোখা’

ঘূর্ণিঝড় মোখা: ঝুঁকিতে কক্সবাজার

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে মোখা

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৩
ইইউডি/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।