ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রাজধানীতে দুই দিনব্যাপী রবীন্দ্রসঙ্গীত উৎসব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫২ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৩
রাজধানীতে দুই দিনব্যাপী রবীন্দ্রসঙ্গীত উৎসব

ঢাকা: ‘করিস নে লাজ, করিস নে ভয়/ আপনাকে তুই করে নে জয়’— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই অমিয়বাণী ধারণ করে শুরু হলো ৩৪তম জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত উৎসব।

বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার উদ্যোগে শুক্রবার (১২ মে) উৎসবের দুদিনের কার্যক্রম শুরু হয়।

প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা হয় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে।

প্রথমে উৎসব মিলনায়তনের বাইরে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে’ গানের সঙ্গে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করা হয়। এতে অংশ নেন নৃত্যনন্দনের শিল্পীরা। প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে উৎসবের সূচনা করেন সংস্থার নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদ। এরপর উপস্থিত সবাই রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে গাইতে মিলনায়তনে প্রবেশ করেন।

সূচনা পর্বে সংস্থার শিল্পীরা পর পর সমবেত গান ‘আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার’ ও ‘দারুণ অগ্নিবাণে রে’। মিলনায়তনের মূল মঞ্চে ১৬২তম রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত এ উৎসবের মূল পর্ব শুরু হয় দলীয় পরিবেশনায় জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে। এরপর স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও কণ্ঠশিল্পী পীযূষ বড়ুয়া এবং সভাপতির বক্তব্য দেন আমিনা আহমেদ।

বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা কলিম শরাফী এবং এর অগ্রজদের স্মরণ করে আমিনা আহমেদ বলেন, আমরা খুব উচ্ছ্বসিত আপনাদের উপস্থিতিতে। এটা আমাদের প্রেরণা যোগায়। রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চা, সাধনা এটা যেন সবসময় থাকে। নতুন প্রজন্মের কাছে, আমাদের তরুণদের কাছে যেন বাঙালির সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও রবীন্দ্র চর্চা ছড়িয়ে দিতে পারি, সেজন্য আমাদের এই প্রয়াস।

তিনি আরও বলেন, যুগ যুগ ধরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের গান বাংলা ও বাঙালির অস্তিত্বে মিশে আছে। শিল্প-সংস্কৃতির ধারাকে গতিশীল ও সমৃদ্ধ করে চলেছে। তার গানকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে এবং অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখতেই প্রতি বছর এই উৎসব উদযাপন করা হয়। আগামীতেও এই উৎসবের ধারা অব্যাহত রাখা হবে।

আয়োজনে সকালের অধিবেশনে দলীয় পরিবেশনায় অংশ নেয় বৈতালিক, বিশ্ববীণা, উত্তরায়ণ, সুরের ধারা, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি (বাফা) ও সঙ্গীত ভবন। তাদের পরিবেশনায় উঠে আসে সম্প্রীতি, প্রকৃতি, কল্যাণ ও আত্মশুদ্ধির বাণী; যা উপস্থিত শ্রোতা-দর্শকের মনে মুগ্ধতা-প্রশান্তির আবেশ ছড়িয়ে দেয়।

দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রদান করা হয় গুণীজন সম্মাননা। এ বছর সম্মাননা দেয়া হয় কিংবদন্তি গিটার শিল্পী এনামুল কবীর ও বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী লিলি ইসলামকে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংস্থার নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ও কণ্ঠশিল্পী পীযুষ বড়ুয়া।

সম্মাননা পর্ব শেষে সন্ধ্যা ৬টায় ছিল আবৃত্তি ও সঙ্গীতানুষ্ঠান। এই পর্বে একক গান পরিবেশন করেন এনামুল কবীর, লিলি ইসলাম, মল্লিকা বাগচি, রমা বাড়ৈ, মমিতা মমি, স্বাতী সরকার, রিফাত জামাল, অনুশ্রী ভট্টাচার্য, তনুশ্রী ভট্টাচার্য, আঁখি হালদার, মৃদুল চক্রবর্তী, জয়ন্ত আচার্য, পারভেজ বাধন, শাকিল হাশমি, তমাল চক্রবর্তী, জাফর আহমেদ, সত্যম দেবনাথ, মুস্তাফিজুর রহমান তুর্য, কেশব জিপসি, দেবাশীষ চৌধুরী, মহুয়া মঞ্জুরী সুনন্দা, মোকসেদুল ইসলাম, ফেরদৌসার রহমান সহ আরও অনেকে। আবৃত্তি পরিবেশন করেন ডালিয়া আহমেদ।

শিল্পীদের কণ্ঠে শোনা গেলো— ‘প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে’, ‘বিশ্বসাথে যোগে যেথায়, ‘সজনি সজনি রাধিকালো বাজিল কাহার বীণ ‘, ‘বরিষ ধরামাঝে’, ‘আমার মন মানে না’, ‘আমার খেলা যখন ছিল তোমার’, ‘বৈশাখ হে মৌনী তাপস’, ‘তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা’, ‘ভালোবেসে সখী নিভৃত যতনে’, ‘যে রাতে মোর দুয়ারগুলি’, ‘এ মোহ-আবরণ খুলে দাও’, ‘শুন্য হাতে ফিরি হে’, ‘অধরা মাধুরী ধরেছি ছন্দোবন্ধনে’ সহ আরও গান।

উৎসবের দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম শুরু হবে আজ শনিবার (১৩ মে) বিকাল ৫টায়। অনুষ্ঠান সকলের জন্য উন্মুক্ত।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫২ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৩
এইচএমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।