ঢাকা, রবিবার, ১৯ মাঘ ১৪৩১, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

নারী গৃহকর্মীদের সুরক্ষায় বমসার ৭ সুপারিশ 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২৩
নারী গৃহকর্মীদের সুরক্ষায় বমসার ৭ সুপারিশ 

ঢাকা: দেশে ও প্রবাসে কর্মরত নারী গৃহকর্মীদের নির্যাতন-নিপীড়ন ও মজুরি চুরি প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামোতে সুরক্ষা নিশ্চিতসহ সাত দফা সুপারিশ জানিয়েছে বাংলাদেশি অভিবাসী মহিলা শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন (বমসা)।

সোমবার (৩১ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকদের কাছে এসব সুপারিশ জানান।

বমসার সুপারিশগুলো হলো: আইএলও সনদ ১৮৯ ও ১৯০ অতি দ্রুত অনুসমর্থন ও অনুস্বাক্ষর করে সুস্পষ্ট আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে দেশে ও বিদেশে কর্মরত সব গৃহকর্মীদের বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং বৈষম্য, হয়রানি ও নিপীড়ন বন্ধ করা।

অভিবাসী শ্রমিকের মজুরি চুরি ও অভিবাসীদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন কর্তৃক প্রস্তাবিত একটি ‘আন্তর্জাতিক বিচার প্রক্রিয়া’ প্রতিষ্ঠা করা ও এর মাধ্যমে বিদেশে নিয়োগকারী কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অভিবাসী শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি আদায়, নির্যাতিত কর্মীদের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় ও নির্যাতনকারীদের আইনের আওতায় আনা।

‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫’ তে কিছু বিষয়ে সংশোধন, পরিমার্জন, সংযোজন ও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন, যার মাধ্যমে গৃহকর্মীর সুরক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করা যাবে।

প্রবাসে কর্মরত অবস্থায় কোনো কর্মীর মৃত্যু হলে বাংলাদেশের দূতাবাসের সহায়তায় মরদেহ দেশে আনার পরে সরকারি খরচে আরও একটি ময়নাতদন্ত করে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা ও তদনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

দেশে যেসব নারী ও শিশু গৃহকর্মীরা নির্যাতন, আত্মহত্যা, হত্যা ও ধর্ষণের শিকার হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা।

দেশের অর্থনীতিতে ও দেশের বাইরে কর্মরত সব গৃহশ্রমিকদের অধিকতর অবদান নিশ্চিতে তাদের আর্থিক প্রশিক্ষণ এবং অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ (যেমন- প্রশিক্ষণ, সচেতনতা বাড়ানো ইত্যাদি) গ্রহণ করতে হবে।

গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি সংশোধনের পাশাপাশি একটি পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়ন ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় (যেমন: মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইত্যাদি) প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নীতি বাস্তবায়নের কৌশল প্রণয়ন ও কর্ম পরিকল্পনা করা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বমসার উপদেষ্টা আমিনুল হক তুষার বলেন, আমরা চাই দেশে ও বিদেশে কর্মরত সব গৃহকর্মীদের কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা, সঠিক সময়ে প্রাপ্য মজুরি দেওয়া, নিরাপদ কর্মপরিবেশ, নির্যাতনের সঠিক বিচার ও আইনি সহায়তা। আমরা বিশ্বাস করি, সরকারি ও বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান এ সংস্থার সঙ্গে কাজ করলে আমরা গৃহকর্মীদের কল্যাণ ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবো।

সংবাদ সম্মেলনে সৌদি আরব থেকে নির্যাতন ও প্রাপ্য মজুরি ছাড়া ফেরত আসা তিনজন গৃহকর্মী ও দেশের একজন নির্যাতিত গৃহকর্মী তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।

বমসার ডেপুটি ডিরেক্টর প্রবীর কুমার বিশ্বাসের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক শেখ রুমান, চেয়ারম্যান লিলি জাহান, শ্রমিক নেতা আবুল হোসেন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২৩
এসসি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।