ঢাকা: দেশে প্রথমবারের মতো যাত্রীবহন সুবিধাসহ রো রো ফেরি চালু হয়েছে। ‘এবার যাব বাড়ি, সঙ্গে যাবে গাড়ি’ স্লোগানে ঢাকা-ভোলা রুটে এ সেবা চালু করেছে সরকার।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে এ সার্ভিসের উদ্বোধন করেন।
জানা গেছে, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে কার্নিভাল ক্রুজ লাইন লিমিটেডের মিটেডের ‘কার্নিভাল ক্রুজ’ ও ‘কার্নিভাল ওয়েভ’ নামের ফেরি দুটি বাণিজ্যিকভাবে চলাচল করবে।
যাত্রীবহন সুবিধাসহ রো রো ফেরি সার্ভিসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যানবাহনসহ যাত্রী পারাপার ফেরি সার্ভিস পৃথিবীর অনেক দেশে আছে। আমাদের দেশে এটি নতুন। এটা আমাদের গর্বের। আমরা ফেরি সার্ভিসে আন্তর্জাতিক মানের অংশ হয়ে গেলাম। দ্বীপ জেলা ভোলাবাসীর জন্য আজ এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপকূলীয় মানুষের জন্য সবসময় চিন্তা করেন। তাদেরকে মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসতে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেন। ভোলা জেলায় অনেক কিছুই আছে। তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থাটা দুর্বল।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা দিয়েছেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করার জন্য। আগে ভোলার মানুষ যেখানে রাতে মানুষ লঞ্চে চলাচল করত, এখন দিনের বেলায় মানুষ লঞ্চে চলাচল করে। আমরা প্রথম দিনের বেলা লঞ্চ সার্ভিস চালু করেছি। জনগণ উপকার পাচ্ছে। আজকে আর একটি ঐতিহাসিক ঘটনা যানবাহনসহ যাত্রীবাহী রো রো ফেরির উদ্বোধন। প্রধানমন্ত্রীর বৃহত্তর আঙ্গিকের কথা চিন্তা করেন। রাঙ্গাবালী চরমোনতাজ থেকে ঢাকা লঞ্চ চালু করেছেন। সন্দীপে যেটি তৈরি করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসির অত্যাধুনিক যাত্রীবাহী জাহাজ হাতিয়া, সন্দীপ রুটে চালু করেছেন। যাত্রী পারাপারে ভূমিকা রাখছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, হাতিয়া, সন্দীপ, কুতুবদিয়া, টেকনাফের সাবরাং পর্যন্ত নৌ যোগাযোগ সহজতর করার লক্ষ্যে তিন হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এতে করে উপকূলীয় অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হবে। দুর্ভোগ শূন্যতে চলে আসবে। দেশের উপকূলীয় ও অনুন্নত এলাকায় মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাজ করা হচ্ছে। আমাদের দেশে জাহাজ তৈরি হচ্ছে, ড্রেজার তৈরি হচ্ছে, যুদ্ধজাহাজ তৈরি হচ্ছে। আমরা এক সময় উড়োজাহাজ তৈরি করব। মেরিটাইম সেক্টরে সেক্টরে যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে।
খালিদ মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশকে আটকে ধরার জন্য, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত করার জন্য নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে। আমাদেরকে ইস্পাত কঠিন ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ারা দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে, দেশ অন্ধকারের পতিত হয়েছে। আমাদের সৌভাগ্য প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন বলেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আগে এক কিলোমিটার রাস্তা করার জন্য বিদেশিদের কাছে ধর্না দিতে হতো। এখন সে অবস্থা নেই। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সমগ্র বাংলাদেশ বদলে গেছে। পদ্মা সেতু হয়েছে। ঢাকা শহরে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হয়েছে। আগামীতে পাতাল রেল নির্মাণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী যেখানেই যান না কেন সেখানকার রাষ্ট্রপ্রধানরা থমকে যায়। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সমগ্র বাংলাদেশ বদলে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের কারণে আমেরিকা, পশ্চিমারা বাংলাদেশকে সমীহ করে। কারণ আমাদের নেতৃত্বের নাম শেখ হাসিনা। একজন মানুষ তার সঠিক নেতৃত্বে বদলে দিতে পারে। আমাদের স্বপ্ন এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাব।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মতিউর রহমান, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান এস এম ফেরদৌস আলম, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর এম মাকসুদ আলম, বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ইকবাল হোসেন, কার্ণিভাল ক্রুজ লাইন লিমিটেডের পরিচালক মোহাম্মদ মাসুম খান প্রমুখ।
কার্নিভাল ক্রুজ লাইনের পরিচালক মাসুম খান জানান, যানবাহনসহ যাত্রীবাহী দুটি রো রো ফেরি ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা-ভোলা (ইলিশা) রুটে চলাচল করবে। ঢাকা কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ থেকে প্রতিদিন সকাল আটটায় ছেড়ে যাবে। ভোলার ইলিশা ঘাটে দুপুর ২টায় পৌঁছাবে। ইলিশা থেকে রাত ৯টায় ছাড়বে। ফেরিতে সিট ক্যাপাসিটি রয়েছে ৩৩০ জনের। এর মধ্যে কেবিন ৬০টি, চেয়ার ১০০টি। ৩৫টি গাড়ির ধারণ ক্ষমতা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৩
এমআইএইচ/এমজে