ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাব’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩
‘সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাব’ মির্জা আব্বাস (ফাইল ছবি)

তানভীর আহমেদ ও মাহবুবুর রহমান মুন্না, খুলনা থেকে: সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপির ৫ম রোডমার্চ। মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর)  সকালে ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে রোডমার্চ শেষ হয় খুলনার শিববাড়ী মোড়ে।

 

মাগুরা, যশোর হয়ে দীর্ঘ ১৬০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন নেতাকর্মীরা। দীর্ঘ এই সড়কে ছয়টি স্থানে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।  

এসব পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মির্জা আব্বাস বলেছেন, রোডমার্চে আজ আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। আমার মনে হচ্ছিল, ঈদের আগে চাঁদরাত পালন করছি। আজ সারাদেশের মানুষ উদ্দীপ্ত, উচ্ছ্বসিত, আবেগতাড়িত, মনোবেদনায় অস্থির। একদিকে বিজয়ের আনন্দ করছে, আরেকদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে মানুষ উদ্বিগ্ন।

মির্জা আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়ার পক্ষে বারবার আবেদন করা হলেও সরকার থেকে বিদেশের চিকিৎসা দিতে সুযোগ দিচ্ছে না। আমি কয়েকদিন আগে ম্যাডামকে দেখতে গিয়েছিলাম। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। আমি ম্যাডামকে বলে এসেছি- দেশবাসী আপনাকে নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত। মানুষ আপনার জন্য দোয়া করছেন। বাংলাদেশের মানুষ নিশ্চয়ই আপনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবে। ইতোমধ্যে সারাদেশে সেটা শুরু হয়ে গেছে। আমরা শেখ হাসিনা সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাব।

তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির খুব খারাপ অবস্থা। বাংলাদেশে এখন ডলারের রিজার্ভ নাই বলেই চলে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ২০০৯ সালে বাংলাদেশের খেলাপি ঋণ ছিল ২১ হাজার কোটি টাকা। আজকে বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১০৯ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা কে খেল, এই টাকা গেল কোথায়? আপনার টাকা, আমার টাকা, জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এই টাকা কোথায় গেল জনগণ জানতে চায়? 

এদিকে, সন্ধ্যা রাতে খুলনা শহরের শিববাড়ী মোড়ের জিয়া হল চত্বরে সমাপনী সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

এর আগে বাস-ট্রাক, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল নিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী রোডমার্চে যোগ দেন। পথে পথে মাগুরা, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী রোডমার্চের বহরে যোগ দেবেন। এক পর্যায়ে রোডমার্চের বহর কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ হয়ে যায়।

বিভিন্ন স্থানে রাস্তার দুই ধারে নারী-পুরুষ ও দলীয় নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে রোডমার্চের বহরকে স্বাগত জানান। অনেক স্থানে নারীরা ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে রোডমার্চের বহরকে সিক্ত করেন। এ সময় দলের সিনিয়র নেতারা হাত নেড়ে তাদের অভিবাদন জানান।  

এদিকে ঝিনাইদহে উদ্বোধনী সমাবেশে একটি শিশুকন্যা খালেদা জিয়া সেজে লোহার খাচায়বন্দী হয়ে সবার নজর কাড়েন।

ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী সমাবেশে বিএনপি ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য সৈয়দ মেহেদী হাসান রুমী, খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম আমিত, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, বিএনপি স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এসএম জিলানী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান বক্তব্য দেন।  

উল্লেখ্য, সরকারের পদত্যাগ দাবিতে রংপুর থেকে দিনাজপুর, বগুড়া থেকে রাজশাহী, ভৈরব থেকে সিলেট ও বরিশাল থেকে পিরোজপুর পর্যন্ত চারটি রোডমার্চ করেছে তারা। এ ছাড়া রাজধানীতে একাধিক সমাবেশ করেছে তারা।  

এদিকে আগামী ১ অক্টোবর ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ, ৩ অক্টোবর ফরিদপুর বিভাগে ও ৫ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোডমার্চ অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩
টিএ/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।