ঢাকা: অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে স্কপের নেতারা এসব দাবি জানায়।
স্কপের নেতৃত্বে এ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন ও বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, শ্রম আইন সংশোধন আলোচনার সর্বোচ্চ ফোরাম ত্রি-পক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ বা টিসিসি। শ্রম আইন সংশোধনের লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে একটি কমিটি করা হয়েছিল। সেই কমিটিতে শ্রমিক পক্ষের তিনজন প্রতিনিধি আছেন। শ্রম আইন সংশোধনের জন্য স্কপের পক্ষ থেকে সুপারিশ পাঠানো হয়েছিল। স্কপসহ বিভিন্ন অংশীজনের প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করে প্রায় এক বছর পরিশ্রম করে শ্রম আইন সংশোধনী কমিটির ওয়ার্কিং গ্রুপ একটি খসড়া সংশোধনী প্রস্তুত করেছে। এ খসড়া চূড়ান্ত করার পর টিসিসির অনুমোদন নিয়ে মন্ত্রিসভায় পাঠানোর কথা ছিল। খসড়া চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে আইনের কিছু বিষয়ে শ্রমিক পক্ষের আপত্তি উত্থাপন করা হয়। সেসব বিষয়ে আলোচনা না করেই শ্রম আইন সংশোধনী পাস করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তারা বলেন, শ্রম আইন সংশোধনী কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদন যেমন নেওয়া হয়নি তেমনি টিসিসিতেও আলোচনা চূড়ান্ত না করেই মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর ফলে শ্রম আইনসহ শ্রম সংক্রান্ত নীতিগত বিষয় অনুমোদন করার আইনি প্রক্রিয়া লঙ্ঘিত হয়েছে, যা ভবিষ্যতের জন্য একটি খারাপ উদাহরণ হয়ে থাকবে। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে শ্রম আইন সংশোধন প্রক্রিয়ায় শ্রমিক সংগঠনসমূহের প্রস্তাব, মালিকপক্ষ ও সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া প্রস্তাবগুলো নিয়ে যে পর্যালোচনা করা হয়েছিল এবং তার ভিত্তিতে শ্রম আইনের গণতান্ত্রিক সংশোধনীর যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল সেই প্রক্রিয়াকেও সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হলো এর মাধ্যমে।
বক্তারা বলেন, অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিলের প্রারম্ভেই উল্লেখ করা হয়েছে ‘১৯৫২ সালের অ্যাক্ট ও ১৯৫৮ সালের অর্ডিন্যান্সকে সময়োপযোগী করে কতিপয় চাকরি বা শ্রেণির চাকরি বা সেবাকে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা হিসেবে ঘোষণা, এতদসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ন্ত্রণ ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়নকল্পে আনীত বিল’ হিসেবে এ বিল উত্থাপন করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, পাকিস্তানি পরাধীন আমলে যে আইনের বিরুদ্ধে আমাদের পূর্বসূরিরা আন্দোলন করেছেন আজ স্বাধীন দেশে সেই আইন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাই দেশের সব শ্রমিকের পক্ষে আমরা তিন দফা দাবি জানাচ্ছি।
দাবিগুলো হলো
অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল প্রত্যাহার, টিসিটিকে পাস কাটিয়ে শ্রম আইনের সংশোধনী অনুমোদন প্রক্রিয়া বন্ধ করা ও সংশোধনী পুনর্বিবেচনা করা।
সমাবেশে চলতি মাসের মধ্যে উত্থাপিত দাবি মেনে নেওয়া না হলে আগামী ৫ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রমিক মহাসমাবেশের মাধ্যমে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা। এ দাবির বিষয়ে তারা সমাবেশ শেষে শ্রম সচিবের দপ্তরে একটি স্মারকলিপি দেন।
স্কপের অন্যতম নেতা ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সমন্বয়ক নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্কপ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, আব্দুল কাদের হাওলাদার, সাইফুজ্জামান বাদশা, শামীম আরা, নইমুল আহসান জুয়েল, আমিরুল হক আমিন, বাদল খান, আহসান হাবিব বুলবুল, খোরশেদ আলম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২৩
এসসি/আরবি