ঢাকা: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান তবে তৃতীয় দেশে পাঠানো কোনো স্থায়ী সমাধান নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিস) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
সেমিনারে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র কিছু রোহিঙ্গাকে তাদের দেশে প্রত্যাবাসন করেছে। তবে সে সংখ্যা খুবই সামান্য। টেকসই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান, তবে তৃতীয় দেশে পাঠানো কোনো স্থায়ী সমাধান নয়।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের কোনো রাজনৈতিক সমস্যা নেই। তাদের সঙ্গে সমুদ্র সীমা নিষ্পত্তি হয়েছে। সেখান থেকে প্রয়োজনে আমরা চাল, পেয়াজ আমদানি করে থাকি। তবে এ সংকট সমাধানে রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি।
সেমিনারে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়েই চীনকে বিশ্বাস করে। সে কারণে চীন রোহিঙ্গা ইস্যুতে মধ্যস্থা করছে। আমরা মনে করি প্রত্যাবাসনই চূড়ান্ত সমাধান, অন্য কোনো সমাধান নেই।
তিনি বলেন, এ সংকটে শুধু চীন নয়, আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশেষ করে ইউএনএইচসিআর, জাতিসংঘকেও ভূমিকা রাখতে হবে। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আগামীতে চীন গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এমন গো অ্যান্ড সি, কাম অ্যান্ড সি অতীতে কখনো হয়নি। আমি রোহিঙ্গা এবং মিয়ানমার সরকারের মধ্যে যথেষ্ট অনাস্থা দেখতে পাচ্ছি। বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা মিয়ানমারকে বিশ্বাস করতে পারছে না। এটা মিয়ানমারের প্রতিশ্রুতির ব্যত্যয়। মিয়ানমারও অবশ্য জটিল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কাজটি খুব সহজ নয়। বেশ জটিল। চ্যালেঞ্জের পরও আমি আশাবাদী। আস্থার ঘাটতি দূর করতে আরও পদক্ষেপ নিতে হবে।
সেমিনারে মেজর জেনারেল (অব.) মো. নাইয়িম আশফাক চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা একটি জটিল ও বহুমুখী সমস্যা। নিরাপত্তা ইস্যুও একইভাবে জটিল ও বহুমুখী। এর সঙ্গে মাদক ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীও সক্রিয় রয়েছে। তাই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নজরদারি বাড়ানো জরুরি।
সেমিনারে ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইমতিয়াজ এ হুসেন বলেন, রোহিঙ্গা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত ও সামাজিক সংকট। এ বিষয়গুলোকে খুব গুরুত্ব দিতে হবে।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বিস চেয়ারম্যান এ এফ এম গওসোল আজম সরকার, বিস মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শেখ পাশা হাবিব উদ্দিন। বিসের রিসার্চ ফেলো জাহান শোয়েব প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২৩
টিআর/আরআইএস