নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে গত ১৫ দিনে ক্ষুরা রোগে অন্তত অর্ধশত গরুর মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্ত হয়েছে কৃষক ও বিভিন্ন খামারের প্রায় দুই হাজারের অধিক গরু।
প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর জানায়, ভ্যাকসিন-ওষুধেও কাজ হচ্ছে না। বিষয়টি তাদের ভাবিয়ে তুলেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ইতিমধ্যে আক্রান্ত গরুর রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের ধারণা, এটি ক্ষুরা রোগের নতুন ধরন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় খামার রয়েছে ২৯৮টি। খামার মালিক ও কৃষকদের প্রায় ৩০ হাজার গরু রয়েছে। গত তিন সপ্তাহ আগে উপজেলায় গরুর ক্ষুরা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। প্রায় ১৫ দিনে শহরের আতিয়ার কলোনির সাহিদ ডেইরি ফার্মে পাঁচটি, কাজিরহাটে রবিউল ইসলামের দুটি, গোলাহাটের শাহনাজ পারভীনের তিনটি গরুসহ ওই উপজেলায় অর্ধ শতাধিকের বেশি গরু ক্ষুরা রোগে মারা গেছে। মারা যাওয়া প্রত্যেকটি গরুর বাজার মূল্যে ৮০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা। সেই হিসেবে প্রায় কোটি টাকার গরু মারা গেছে।
এ বিষয়ে ডেইরি ফার্ম মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাহিদ আজিজ বলেন, আমার খামারের গত এক সপ্তাহে দুটি বাছুর ও তিনটি বকনা গরু ক্ষুরা রোগে মারা গেছে। যার বাজার মূল্য ছিল প্রায় ৮ লাখ টাকা। বাকি গরু নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। গরুকে ভ্যাকসিনসহ ওষুধ দিয়েছি, তবে কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। অবশিষ্ট গরু বিক্রি করে দেওয়ার কথা ভাবছি।
তিনি আরও বলেন, প্রায় এক মাস আগে ঢাকা থেকে প্রাণী সম্পদ বিভাগের লোকজন এসে গরুর রক্ত সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন। কিন্তু এত দিনেও কোনো রিপোর্ট দেয়নি। সময়মতো রিপোর্ট দিলে হয়ত গরুগুলোকে বাঁচানো যেত।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কুমার রায় বলেন, রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টি, উঠান বৈঠক ও মেডিকেল ক্যাম্প করে রোগ প্রতিকার সম্পর্কে অবগত করা হচ্ছে। সাধারণত এফএমডি বা ক্ষুরা রোগের ধরন রয়েছে দুটি। ধারণা করা হচ্ছে, সৈয়দপুর উপজেলায় আক্রান্ত রোগটি ক্ষুরা রোগের নতুন ধরন। তাই ঢাকা থেকে প্রাণিসম্পদ বিভাগের বিশেষজ্ঞ দল এখান এসে আক্রান্ত গরুর রক্ত সংগ্রহ করে নিয়ে গেছে। সেটির পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহে এর ফলাফল পাওয়া যাবে। এরপর করণীয় কি তা নির্ধারণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২৪
এসএম