ঢাকা, বুধবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রাষ্ট্রীয় মালিকানায় রাজশাহী পাটকল চালুর দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২৪
রাষ্ট্রীয় মালিকানায় রাজশাহী পাটকল চালুর দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

রাজশাহী: রাষ্ট্রীয় মালিকানায় আবারও রাজশাহী পাটকল চালুর দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শ্রমিকরা।  

রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে পাটকলের সামনে থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।

মিছিলটি কাটাখালি বাজারে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী জুট মিলস শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন এ কর্মসূচির আয়োজন করে। এতে কয়েকশ’ শ্রমিক অংশ নেন।

রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালি এলাকায় ১৯৫৫ সালে এ পাটকল প্রতিষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনাতেই এখানে উৎপাদন চলতো। ২০২০ সালে দেশের ২৫টি পাটকলই ইজারা দিয়ে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ওই সময় কথা ছিল আধুনিকায়নের পর তিন মাসের মধ্যেই পাটকলে আবার উৎপাদন শুরু হবে। কিন্তু চার বছর পার হলেও রাজশাহী পাটকল আর চালু হয়নি। এতে পাটকলের প্রায় ১ হাজার ৭০০ জন শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে পাটকল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ফরমান আলী বলেন, ২০২০ সালে সরকার আমাদের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিল তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। বর্তমান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী শ্রমিকবান্ধব। আমাদের প্রত্যাশা, তিনি এ পাটকল আবার চালু করবেন। শ্রমিকদের দুই বেলা দুই মুঠো খাওয়ার ব্যবস্থা করবেন।

শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন বলেন, ২০২০ সালে যখন পাটকল বন্ধ করা হয় তখন বলা হয়েছিল ইজারা দিয়ে পাটকলগুলো আবার চালু করা হবে। তারপর কয়েকটা পাটকল ইজারা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেগুলো চলছে না। তাই রাষ্ট্রীয়ভাবেই এ পাটকল চালু করতে হবে। এ পাটকলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বসে বসে বেতন নিচ্ছেন। কিন্তু কর্ম হারিয়ে অনাহারে থাকছেন শ্রমিকরা। কর্মহীন অনেক শ্রমিক এখন বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন। এ অবস্থা চলতে পারে না। আমরা কাজ করে গায়ে খেটেই পারিশ্রমিক নিতে চাই।

তিনি আরও বলেন, রাজশাহীতে তেমন ভারি শিল্প নেই। যে দুয়েকটি আছে সেগুলোও বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের অনেকেরই বয়স হয়েছে। আর হয়তো কাজ করতে পারবেন না। কিন্তু নতুনরা কাজের সুযোগ পাক। আমরা এটাই চাই। নতুন মন্ত্রী যদি পাটকল চালু করে দেন শ্রমিকরা দুই হাত তুলে দোয়া করবেন।  

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, পাটকলের মৃত শ্রমিক ও বদলির শ্রমিকদের অনেকের পাওনা পরিশোধ করেনি কর্তৃপক্ষ। ১ হাজার ৭০০ শ্রমিক বেকার থাকলেও ৫৭ জন কর্মকর্তা ও ১৫০ জন কর্মচারী বসে বসে বেতন নিচ্ছেন। তাদের কোনো কাজ নেই। মাসে একদিন এসে হাজিরা খাতায় সই করে বেতন নিয়ে চলে যান। তারা বসে বসে বেতন নিলে যদি লোকসান না হয়, তাহলে শ্রমিকরা উৎপাদন করে মজুরি নিলে লোকসান হবে না। সরকারকে বিষয়টি বুঝতে হবে।

পাটকল চালু করতে রাজশাহীর জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে জিল্লুর রহমান বলেন, আমরা বাড়ি-গাড়ি চাই না। আমরা কাজের পরিবেশ চাই। কাজ করে পয়সা নিতে চাই। অচিরেই যদি পাটকল রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় চালু করা না হয় তাহলে আমরা দেশের ২৫টি পাটকলের শ্রমিকদের সঙ্গেই বসবো। সবাই মিলে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচিতে যাবো। প্রয়োজনে আমরণ অনশন করবো। তারপরও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এভাবে ধ্বংস হতে দেব না।

শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান সমাবেশ পরিচালনা করেন। এতে আরও অনেকে বক্তব্য দেন। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে শ্রমিকরা বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২৪
এসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।