ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

তামাক পণ্য তৈরির কারখানা লাল তালিকাভুক্ত করার দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৩ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৪
তামাক পণ্য তৈরির কারখানা লাল তালিকাভুক্ত করার দাবি আলোচনা সভা। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: তামাক পণ্য তৈরির কারখানাগুলোকে লাল তালিকাভুক্ত করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠন ও জোট।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে যৌথভাবে ‘পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট, তামাকবিরোধী নারী জোট ও ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট আয়োজিত 'তামাক কারখানা: পরিবেশ আইনের প্রায়োগিক সীমাবদ্ধতা ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়।



তামাকবিরোধী সংগঠন ও জোটগুলোর দাবিগুলো, তামাক নিয়ন্ত্রণের একটি সংশোধিত রোড ম্যাপ তৈরি এবং নিরপেক্ষ সেল গঠন; তামাক কারখানাগুলোকে লাল তালিকা ভুক্ত করা; ফসলি জমিতে তামাক চাষ নিষিদ্ধ করা; তামাক কারখানায় শিশু শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হলে শাস্তির বিধান দ্বিগুণ করা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ন্যূনতম আধা কিলোমিটারের মধ্যে সিগারেটের দোকান না দেওয়া।

সভায় বক্তারা বলেন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার আইনটি দীর্ঘদিন ধরে সংশোধনের প্রক্রিয়ায় আটকে রয়েছে। জনস্বাস্থ্যবিষয়ক নীতিগুলো সুরক্ষায় গ্রহণ করা হচ্ছে না কোন সমন্বিত পদক্ষেপ। এসব সংকটে প্রতিনিয়ত লম্বা হচ্ছে মানুষের মৃত্যুর মিছিল। পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ সংশোধন করে তামাকের মতো ক্ষতিকর পণ্যকে পুনরায় লাল তালিকাভুক্ত করা জরুরি।

আলোচনা সভার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের হেড অফ প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমান।  

সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের মতো স্বাস্থ্যহানিকর পণ্য উৎপাদনকারী কারখানা লাল তালিকার অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে মহাখালী ডিওএইচএসের মতো জনবহুল আবাসিক এলাকায় কারখানায় স্থাপন করে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কারখানা থেকে নির্গত দেওয়া প্রতিনিয়ত জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে।  

তিনি বলেন, এ প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯৭ সালে প্রণীত পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা অনুসারে লাল ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত ছিল। সেটিকে কোন বিবেচনায় ২০২৩ সালে থেকে লাল থেকে কমলা ক্যাটাগরিতে নিয়ে আসা হয়েছে তা প্রশ্ন সাপেক্ষ।

উবিনীগের নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ সালে একটা অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেছিলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে আমরা তামাকমুক্ত হব। ইতোমধ্যে তিনভাগের এক ভাগ সময় চলে গেছে। এর মধ্যে তামাক লাল থেকে কমলা শ্রেণিতে নেমেছে। মানে আমরা উল্টো পথে চলছি।  

তিনি আরও বলেন, আইনের মধ্যেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটা সার্টিফিকেট নিলে জর্দার কারখানা করা যায়। তামাক পাতা তুলতে গিয়ে শ্রমিকদের নানা ধরনের চর্মরোগ হচ্ছে। তামাক বাগানগুলোতে বিকলাঙ্গ শিশু জন্মের পরিমাণ বেড়েছে।  

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) নির্বাহী পরিচালক ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, তামাক সংক্রান্ত আইন সংশোধন করতে হবে এবং তা প্রয়োগ করতে হবে। তবে এই আইন যারা প্রয়োগ করবেন তাদেরই অনেক সময় ধূমপান করতে দেখা যায়। ২০৪০ এর মধ্যে আমরা তামাকমুক্ত দেশ গর্ব তার কোন লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সহ-সাধারণ সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ রাসেলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পবার সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না, সম্পাদক সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী হেলাল আহমেদ, ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটির বাংলাদেশের সমন্বয়ক জীবন কুমার সরকার, সূচনা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক তাহমিনা আক্তার প্রমুখ৷

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৪
এসসি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।