ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জয়পুরহাটে আ.লীগ-ছাত্রলীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, নিহত ১

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২৪
জয়পুরহাটে আ.লীগ-ছাত্রলীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, নিহত ১ প্রতীকী ছবি

জয়পুরহাট: জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষোভকারীরা।  

রোববার (৪ আগস্ট) এসব ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও ছররা গুলি ছোড়ে। এ সময় গুলিতে মেহেদী হাসান বিশাল (১৮) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। হামলা ও সংঘর্ষে স্থানীয় সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদুসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।

জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এসএম গালিব আনোয়ার বলেন, দুপুর ১২টার পর থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৬৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন গুলিবিদ্ধ। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে জয়পুরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদু, অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতা ও বিক্ষোভকারীরা রয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, সকাল ১০টার পর বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা শহরের নতুন হাটে জড়ো হন। সকাল ১১টার দিকে তারা মিছিল নিয়ে বাটার মোড়ে আসেন। সেখানে আগেই জড়ো হওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীরা শিক্ষার্থীদের মিছিলে যোগ দেন। বাটার মোড় থেকে মিছিল নিয়ে শহরের জিরো পয়েন্ট-পাঁচুর মোড়ে আসেন। এ সময় চিত্রা রোড কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের সামনে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছিলেন। পুলিশ ওই সড়কে ব্যারিকেড দেয়।

অভিযোগ উঠেছে, এ সময় আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে কিছু ব্যক্তি বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে উসকানিমূলক কথা বলেন। এরপর রেলগেট অতিক্রম করে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। তারা কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে স্থানীয় সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদু, রাজা চৌধুরী, মীর মোয়াজ্জেম হোসেন, কৃষিবিদ তুহিন, জাহাঙ্গীর আলমসহ দলটির ১০ থেকে ১২ জনকে পিটিয়ে জখম করেন এবং কার্যালয়ের আসবাবপত্র ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থাকা পাঁচটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর তারা রেলস্টেশন সংলগ্ন ছাত্র লীগের কার্যালয়ে আগুন দেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও ছররা গুলি ছোড়ে। এ সময় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক আহত হন। তাদের মধ্যে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৬৮ জনকে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। গুলিবিদ্ধ মেহেদী হাসান বিশালকে বগুড়ায় পাঠানোর পথে কালাই উপজেলায় তিনি মারা যান। তাকে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাজনীন নাহার ডেইজি তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মেহেদী হাসানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভকারীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। বিকেলে শহরের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান করছিলেন তারা। পরে জয়পুরহাট সদর থানা কার্যালয় ঘেরাও করতে আসেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় আরও দুজনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ সময় উপজেলা পরিষদ চত্বরে থাকা তিনটি প্রাইভেটকার আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা। এখন শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ নূরে আলম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর আছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।