সাতক্ষীরা: বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় সাতক্ষীরায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণা করেছে। নিষ্কাশনের পথ না থাকায় জলাবদ্ধ এলাকার মানুষজন তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে।
উপকরণ বস্তায় ভরে সেলাই করে তৈরি ভেলার ওপরে হালকা কাঠের পাটাতন দিয়ে বসা বা দাঁড়ানোর উপযোগী করে চলাচলে ব্যবহার করছেন স্থানীয়রা।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর, ব্রহ্মরাজপুর, ফিংড়ি, লাবসাসহ আশপাশের জলাবদ্ধ এলাকায় ভেলা এখন একমাত্র বাহন। এদিকে দ্রুততম সময়ে পানি নিষ্কাশনে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এলাকাবাসী।
ধুলিহর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের নজরুল সানা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা পানিবন্দি। আমি মাছের ব্যবসা করি। আমাকে দিনে ৩-৪ বার বাজারে যেতে হয়। বার বার ভেজা সম্ভব না। তাই প্লাস্টিকের ভেলা তৈরি করে নিয়েছি।
শাহিনুর নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমাদের এলাকায় বন্যার কারণে পানি দূষিত হয়ে গেছে। খাবার পানির খুব সংকট। ভেলায় করে তিন থেকে চার কিলোমিটার দূর থেকে খাবার পানি আনা হয়।
গোবিন্দপুর গ্রামের জাকির হোসেন বলেন, এখনও পোল্ট্রির খামারটি জেগে আছে। মুরগির জন্য প্রতিদিন খাবার আনতে হয়। ভ্যান কিংবা ইজিবাইক এলাকায় ঢোকে না। তাই ভেলায় করে করে ২৫ কেজি ওজনের চার বস্তা পোল্ট্রি ফিড কিনে আনলাম।
আশিকুর রহমান আশিক নামে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্র বলে, স্কুল ও প্রাইভেট পড়তে যেতে প্রতিদিন দুইটা ড্রেস ভিজে নষ্ট হতো। তাই আমার আব্বু ভেলা তৈরি করে দিয়েছে। ভেলায় করে আমি বাড়ি থেকে রাস্তায় উঠি।
বালুইগাছা গ্রামের হাফিজুল বলেন, জলাবদ্ধতায় পানি দূষিত হয়ে যাওয়ায় হাত-পা চুলকায়। তায় আমি ভেলায় করে প্রয়োজনীয় কাজ মেটায়। তিনি জানান, নৌকা কেনা সম্ভব না। এজন্য সবাই ভেলা ব্যবহার করছেন।
প্রসঙ্গত, অপরিকল্পিত নদী খনন ও অপরিকল্পিত মৎস্য ঘেরের কারণে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় সাতক্ষীরার বিস্তীর্ণ এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২৪
এসএম