ঢাকা: অর্ধশতাধিক সদস্যের একটি পর্যটকদল এমভি উৎসব নামক জাহাজে সুন্দরবন ভ্রমণে যায়। গত ৭ নভেম্বর তারা সংরক্ষিত অঞ্চল কটকায় পৌঁছায়।
খবর পেয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সদস্যরা নদীপথে সুপার স্পিডবোটে দ্রুত সময়ের মধ্যে ৮৬ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে সেই শিশুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।
সোমবার (১১ নভেম্বর) বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (বিএন) খন্দকার মুনিফ তকি ঘটনার বিস্তারিত জানান। গত ৭ নভেম্বর এ ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, সুন্দরবনের কটকা থেকে মোংলা অথবা খুলনার দূরত্ব আনুমানিক ৮৬ কিলোমিটার, যা প্রায় নয় ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত। তাছাড়া পর্যটন জাহাজগুলোর চলাচলের গতি নিতান্তই সীমিত। কাছাকাছি দূরত্বে জনবসতির চিহ্ন মাত্র নেই। জাহাজের মধ্যে নেই চিকিৎসক।
টেলিযোগাযোগের একমাত্র অবলম্বন টেলিটকের একটি মাত্র নম্বর। ওই পর্যটক জাহাজে উপস্থিত ছিলেন সামরিক বাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তিনি বিষয়টি দেখতে পান এবং সঙ্গে সঙ্গে কোস্ট গার্ড সদরদপ্তরকে জানান।
খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ঝাঁপিয়ে পড়ে শিশুটিকে উদ্ধার ও চিকিৎসার জন্য। কোস্ট গার্ড পশ্চিম অঞ্চলের সার্জন লেফটেন্যান্ট মোহাম্মদ রায়হানুল জান্নাহর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি মেডিকেল দল জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জামসহ সুপার স্পিডবোটে কটকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে।
রাতে কুয়াশার মধ্যে উদ্ধারকারী দলটি অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যেই ৮৬ কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দিয়ে সুন্দরবনের দুর্গমতম স্থানে থাকা পর্যটক জাহাজ এমভি উৎসবে গিয়ে পৌঁছায়। পরে ওই সার্জন অসুস্থ শিশুটিকে জরুরি প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়।
ওই স্পিডবোট শিশুটিকে অত্যন্ত দ্রুত মোংলা বেজে স্থানান্তর করে। এরপর বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হয় খুলনায় বিশেষায়িত হাসপাতালে। এতে ভ্রমণকারী জাহাজে অবস্থানরত পর্যটক ও জাহাজ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
পর্যটন মৌসুমে সাধারণত এ ধরনের জাহাজগুলো সমুদ্রের কাছাকাছি সুন্দরবনের গহীন এলাকায় গিয়ে থাকে। সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্গম এবং জরুরি চিকিৎসা সেবা দেওয়া অত্যন্ত দুরূহ বিষয়।
এ কারণে ট্যুরিস্ট জাহাজগুলো একজন চিকিৎসক, প্যারামেডিক নিয়ে গেলে এ ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা এড়ানো সম্ভব বলে জানান লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (বিএন) খন্দকার মুনিফ তকি ।
বাংলাদেশ সময়: নভেম্বর ১১, ২০২৪
এজেডএস/আরএইচ