ঝিনাইদহ: ২১ দিন আগে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ভৈরবা জননী ক্লিনিক নার্সিং হোমে সিজারের পর অসুস্থ হয়ে পড়া জেসমিন খাতুন মারা গেছেন।
শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) ভোরে ঢাকার মগবাজারের একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
জেসমিন খাতুন ওই ক্লিনিকে সিজার হওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকায় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। এদিন জেসমিনের এক আত্মীয় বাদী মহেশপুর থানায় জননী ক্লিনিকে অপচিকিৎসার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামি করা হয়- ক্লিনিক মালিক মনিরুল ইসলাম ওরফে খোকন, ডা.সহিরদ্দিন, ডা.গোলাম রহমানসহ ৪ জনকে। তবে, আসামিদের এখনও গ্রেফতার করা হয়নি।
মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিদুল ইসলাম শাহিন জেসমিন খাতুনের মৃত্যুর বিযয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, জেসমিনের মৃতদেহ মহেশপুরে আসার পর ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
গত আগস্ট মাসে জননী ক্লিনিক নার্সিং হোমে ৪ প্রসূতির মৃত্যু হয় ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেপ্টেম্বর মাসে মৃত্যু হয় ২ প্রসূতির।
এরা হলেন- মহেশপুর উপজেলার বালিনগর গ্রামের আবু বকরের মেয়ে রুপা খাতুন, ভৈরবা গ্রামের আশা মোল্লার মেয়ে আরিফা খাতুন, সাতপোতা গ্রামের আশা আহম্মেদের মেয়ে সালেহা খাতুন, কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামের নাজমুল ইসলামের স্ত্রী বিথি খাতুন ও পাসপোতা গ্রামের নজরুল ইসলামের স্ত্রী খায়রুননেছা।
সর্বশেষ শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) মৃত্যু হয়েছে নিশচিন্তপুর গ্রামের আবু হাসানের স্ত্রী জেসমিন খাতুনের।
এসব প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় ঝিনাইদহ সিভিল সার্জনকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিম গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা.এমদাদুল হক ও সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা.জাহিদুর রহমান। এ কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

প্রতিবেদনে ক্লিনিক মালিক মনিরুল ইসলাম খোকন, জীবননগর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গোলাম রহামন ও মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা.আব্দুস সালাম বাংলানিউজকে বলেন, জননী ক্লিনিকে সিজার করার পর এসব প্রসূতি সবাই মাথার যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন। পরে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়ার পর তারা মারা যান। একই নিডল বারবার ব্যবহার, ওটি রুমে নোংরা পরিবেশসহ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রসূতিদের অপারেশন করায় এভাবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা তদন্ত করে জানতে পেরেছি। তদন্তে যাদের দোষী করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৫
পিসি