ঢাকা: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আরোপের কারণে টিউশন ফি যেন না বাড়ে তা প্রতিহতের ব্যবস্থা নাও।
মুহিত বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি’র ওপর যে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকরা দিতে চেয়েছেন।
তিনি বলেন, ফিস-টিস, ডেভলপমেন্ট ফান্ড ইত্যাদি ইত্যাদির মাধ্যমে ভ্যাটের টাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হবে। সে বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে আমি বলেছি, তোমরা (শিক্ষার্থী) আগামী বছরের জন্য প্রস্তুতি নাও। যাতে ভ্যাটের কারণে তোমাদের ফিস আবার না বাড়ে। এটি প্রতিহত করার প্রচেষ্টা নাও।
শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বাংলা একাডেমিতে আয়োজিত ‘বিতর্ক বিকাশ’ প্রতিযোগীতার গ্র্যান্ড ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মুহিত বলেন, প্রতি উপজেলায় একটি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নানা জায়গায় রাস্তা নির্মাণ করতে হবে। পুরান রাস্তাগুলোকে নতুন করে ঠিক করতে হবে। প্রত্যেকের স্বাস্থ্য সেবা দিতে হবে। এসব বিষয় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন খাত থেকে সরকারের কাছে আসছে।
এগুলো বাস্তবায়ন করতে গেলে রাজস্বের আয়তন আরও বাড়াতে হবে। সেই আয়তন বাড়াতে গেলে বিভিন্ন জায়গায় খোঁচা দিতে হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা দেখলাম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ফিস অত্যন্ত উচ্চ হারের। আমি একটি হিসাবে দেখেছি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী দিনে এক হাজার টাকা খরচ করে।
এই টাকা লাগে তার ফিস, বই, খাওয়া ও পরিবহনের জন্য। এই এক হাজার টাকার মধ্যে আমি চেয়েছি ৭৫ টাকা। এটিই হলো ভ্যাট। কিন্তু সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপের কারণে আমাদের শিক্ষার্থী, শিক্ষক সবাই আন্দোলনে চলে গেলেন, বলেন অর্থমন্ত্রী।
সুদের হার সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, সুদের হার নির্ধারণ করেন ব্যবসায়ীরা। সরকার শুধু সঞ্চয়পত্রের সুদ হার নির্ধারণ করে। আমাদের দেশের অসুবিধা হলো, ব্যবসায়ীদের লভ্যাংশের আশা অত্যধিক বেশি। ২০ শতাংশের নিচে কেউ লভ্যাংশ প্রত্যাশা করেন না।
তিনি বলেন, এ মূহুর্তে দেশে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ বা তার চেয়ে কিছু বেশি অথবা কম। সাধারণত বলা হয়, মূল্যস্ফীতি যা হবে তার থেকে দুই শতাংশ বেশি সুদের হার নির্ধারণ হবে। সেজন্য উচ্চ সুদের হার বর্তমানে দেশে মোটেই যুক্তিযুক্ত না। তাই বেসরকারি খাত যদি সুদের হার কমায়, সঙ্গে সঙ্গে সরকার সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমিয়ে দেবে।
‘বিতর্ক বিকাশ’ বিতর্ক প্রতিযোগীতার আয়োজন করে ব্র্যাক, এটিএনবাংলা ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। প্রতিযোগীতার গ্র্যান্ড ফাইনালে অংশগ্রহণ করে মুন্সীগঞ্জের বজ্রযোগিনী জে কে উচ্চ বিদ্যালয় ও নাটোরের আগ্রাণ উচ্চ বিদ্যালয়।
‘কেবল শিক্ষাক্ষেত্রে বিনিয়োগই টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারে’ শীর্ষক বিতর্ক বিষয়ের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে এতে বিজয়ী হয় বজ্রযোগিনী জে কে উচ্চ বিদ্যালয়। আর সেরা বক্তা নির্বাচিত হন বিজয়ী দলের দলনেতা সুরভী আক্তার অধরা।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সঞ্চালনায় আনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষা সচিব মো. নজরুল ইসলাম খান, এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ড. মুহম্মদ মুসা প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫/আপডেট: ১৬৪৬ ঘণ্টা
এএসএস/জেডএস