শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): সারাদেশের চা শ্রমিকরা সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করবেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনের মজুরি প্রদানসহ দ্বিপাক্ষিক চুক্তি দ্রুত নবায়ন করার দাবিতে সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে এ প্রতীকী কর্মবিরতি।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের (বাচাশ্রই) অন্তর্গত ৭টি ভ্যালি কমিটি এবং প্রতিটি চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির নেতৃত্বে দেশের ২৪০টি (ফাঁড়ি বাগানসহ) চা বাগানে একযোগে এ কর্মসূচি পালিত হবে।
ইতোপূর্বে সম্পাদিত দুই বছরের চুক্তি দ্রুত নবায়ন না হওয়ায় প্রতিটি চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির মধ্যে এখন বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা। চুক্তিতে সাপ্তাহিক ছুটির দিনের মজুরি প্রদানের বিষয়টি সংযোজনের দাবি জানাচ্ছেন শ্রমিকরা।
বালিশিরা ভ্যালি কমিটির সভাপতি বিজয় হাজরা বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের আমরা নির্বাচিত প্রতিনিধি। গত বছরের ১০ আগস্ট চা শ্রমিকদের সরাসরি ভোটে আমরা নির্বাচিত হই। শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে আমরা চা বাগানের মালিকপক্ষের সঙ্গে ইতোমধ্যে মোট বারটি সভা করেছি।
তিনি আরো বলেন, দশটি সভা পর্যন্ত অগ্রগতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। মালিকপক্ষের প্রতিনিধিদের কথায় আমরা আন্তরিকতা লক্ষ্য করেছি। কিন্তু পরবর্তী দুই সভায় শ্রমিকদের সঙ্গে চুক্তি নবায়নের ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি নেই। তাই শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে এ কর্মসূচি দিয়েছেন।
আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যদি সাপ্তাহিক ছুটির দিনের মজুরিসহ যদি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি নবায়ন না করা হয় তবে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যাবো বলেও জানান এই শ্রমিক নেতা।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরি বাংলানিউজকে বলেন, ভ্যালি কমিটি এবং বাগান পঞ্চায়েত কমিটিগুলোর এ কর্মসূচিকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন শ্রমিকদের এ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি।
তিনি আরো বলেন, চা বাগানের ব্যবস্থাপকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদের (বিবিএস) কাছে আমরা আশা প্রকাশ করছি, আমাদের এ ন্যায্য দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করে চা বাগানে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনবেন।
বাংলাদেশীয় চা সংসদের (সিলেট ব্রাঞ্চ) চেয়ারম্যান ও ফিনলে টি কোম্পানির উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) গোলাম মোহম্মদ শিবলি বাংলানিউজকে বলেন, অনতিবিলম্বেই শ্রমিকদের চুক্তিগুলো আমরা বাস্তবায়ন করবো। আমরা সব সময়ই আমাদের প্রিয় চা শ্রমিকদের মৌলিক দাবিগুলোর প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে থাকি। এবারও তার ব্যক্তিক্রম ঘটবে না।
এ কর্মসূচির ব্যাপারে তিনি বলেন, সম্ভবত আমাদের প্রতি চাপ সৃষ্টি করার জন্য তারা এ কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। আমাদের চা শ্রমিকদের জন্য আমরা রেশন, চিকিৎসা, বাড়ি ইত্যাদি ফ্রি করে দিয়েছি।
অন্য শ্রমিকদের চেয়ে চা শ্রমিকরা ভালো আছেন উল্লেখ করে চা বাগান মালিক পক্ষের এই প্রতিনিধি বলেন, জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চা পাতার মৌসুম। গড়ে তারা প্রতিদিন গড়ে ৫০ কেজি করে চা পাতা আহরণ করতে পারেন। প্রতি কেজি চা পাতার উত্তোলন মূল্য ৩ টাকা হলে তারা দিনে আয় করেন ১৫০ টাকা। কেউ কেউ আবার ৭০ থেকে ১০০ কেজিও তুলে ফেলেন। এখন তো চুক্তি অনুযায়ী ওই তিন টাকা আরো বাড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৫
বিবিবি/এএসআর