ঢাকা, রবিবার, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

এরশাদের এমপি পদ বাতিলে ইসিতে অভিযোগ

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৫
এরশাদের এমপি পদ বাতিলে ইসিতে অভিযোগ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সংসদ সদস্য (এমপি) পদ বাতিলে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) অভিযোগ জমা পড়েছে। এতে তার বিরুদ্ধে লাভজনক পদে আসীন থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।


 
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের কাছে অভিযোগটি দাখিল করেছেন কল্যাণ পার্টির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. মুবিনুল হক।
 
এতে তিনি উল্লেখ করেছেন- সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের দফা (২) এর উপদফা (চ) অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার এবং সংসদ সদস্য থাকবার যোগ্য হবে না, যদি আইনের দ্বারা পদাধিকারীকে অযোগ্য করছে না এমন পদ ব্যতীত তিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন।
 
এদিকে লাভজনক পদের ব্যাখ্যা দিয়ে মুবিনুল উল্লেখ করেছেন, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের দফা (৩) এ বলা হয়েছে- এই অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য সাধন কল্পে কোনো ব্যক্তি কেবল রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী হওয়ার কারণে প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত বলে গণ্য হবেন না। অর্থাৎ এই দফাতে বর্ণিত পদগুলো ছাড়া অন্য যে কোনো পদ একজন এমপির জন্য লাভজনক।
 
এছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এর ৯১(ই) ধারার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেছেন, যে কোনো একজন এমপির জন্য লাভজনক পদ বলতে বোঝায়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের চাকরিতে বা খেদমতে কোনো কর্মকর্তা হিসেবে থাকা অথবা কোনো দায়িত্বে থাকা অথবা কোনো নিযুক্তিতে থাকা, কোনো পদে বা দায়িত্বে থাকা অথবা কোনো বিধিবদ্ধ পাবলিক বা গণকর্তৃপক্ষের চাকরিতে বা খেদমতে কোনো কর্মকর্তা হিসেবে থাকা অথবা কোনো দায়িত্বে থাকা অথবা কোনো নিযুক্তিতে থাকা কোনো পদে বা দায়িত্বে থাকা; এমনকি এমন কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি যেটাতে বাংলাদেশ সরকারের পঞ্চাশ শতাংশের বেশি অংশীদারিত্ব মালিকানা আছে ওইরূপ কোনো ব্যবসা থাকা অথবা কোনো নিযুক্তিতে থাকাকেও লাভজনক পদে থাকা হিসেবে বর্ণিত করা হয়েছে।
 
অন্যদিকে সংবিধানে ৭০ অনুচ্ছেদের প্রসঙ্গ টেনে কল্যাণ পার্টির এই নেতা বলেছেন, কোনো সংসদ সদস্যের পদ শূন্য হবে কি না সে সম্পর্কে কোনো বিতর্ক দেখা দিলে শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য প্রশ্নটি নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রেরিত হবে এবং অনুরূপ ক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।
 
মুবিনুল হক তার অভিযোগে বলেছেন, বিধান বিশ্লেষণে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীর ‘বিশেষ দূত’ পদটি লাভজনক পদ। আর জাতীয় পার্টির চেয়ার‌ম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ওই পদে আসীন হয়ে লাভজনক পদে আসীন হয়েছেন। যা সংবিধান লঙ্ঘন। তাই তাঁর পদটি বাতিল হওয়া উচিত এবং পরবর্তীতে অন্য কোনো নির্বাচনের জন্য অযোগ্য ঘোষিত হওয়া উচিত। সংবিধানে ৬৬ এর দফা (২) ও (৪) অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনও তার ক্ষমতা প্রয়োগে বাধ্য।
 
সম্প্রতি সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধেও এমন একটি বিতর্ক ওঠেছিলো। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম অভিযোগটি এনেছিলেন। কিন্তু সেটা ইসিতে এসেছিলো স্পিকারের মাধ্যমে। যদিও বিতর্ক নিষ্পত্তির আগেই লতিফ সিদ্দিকী পদত্যাগ করেন।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির একজন উপ-সচিব বাংলানিউজকে বলেন, অভিযোগটি কয়েকদিন হলো ডাকযোগে এসেছে। বর্তমানে এটি নথিতে উপস্থাপন করার প্রক্রিয়া চলছে। এরপর আইন শাখার মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
 
এ বিষয়ে জানতে মুবিনুল হককে তাঁর মোবাইল নম্বরে ৩ বার চেষ্টা করেও নম্বরটি খোলা পাওয়া যায়নি।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৫
ইইউডি/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।