ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ মাঘ ১৪৩১, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বান্দরবানে নবান্ন উৎসব

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৫
বান্দরবানে নবান্ন উৎসব ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বান্দরবান: জুমের নতুন ফসল ঘরে তোলার আনন্দে ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসব উদযাপন করেছে বান্দরবানের মুরং সম্প্রদায়।
 
শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা শহরের চিম্বুক-থানচি সড়কের ম্রোলং পাড়ায় এ উৎসবের উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং।

 
 
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক মিজানুল হ্ক চৌধুরী, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষ্মীপদ দাসসহ মুরং সম্প্রদায়ের নেতারা।  
 
উৎসবে আসা মুরং জনগোষ্ঠীর উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মুরংদের একসময় পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় হিসেবে মনে করা হলেও এখন তারা আর আগের মতো পিছিয়ে নেই। তারা লেখাপড়া করছে, লেখাপড়া শিখে সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে ভুমিকা রাখছে। মুরং শিশুদের জুম চাষে না পাঠিয়ে স্কুলে পাঠানোর আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।  
 
এদিকে নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে উৎসবস্থলে সকাল থেকে বিভিন্ন গ্রামের নারী-পুরষ দলবেধে উৎসবস্থলে জড়ো হতে থাকেন। উৎসবের শুরুতে জুমের উৎপাদিত চাল, মিষ্টি কুমড়া, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল তাদের ধর্মীয় দেবতা চাকাম নামকে উৎসর্গ করা হয়। পরে জুম ফসল প্রদর্শন করা হয়।  
 
এছাড়া উৎসবে জুম ধানের তৈরি বিভিন্ন প্রকার পিঠা দিয়ে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে মুরং লোকগীতি এবং নৃত্য পরিবেশন করে স্থানীয় মুরং শিল্পীরা।  
 
পরে, অতিথিদের ভুরিভোজ করানো হয়। উৎসবে মুরং সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠি ছাড়াও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন অংশ নেন।
 
এদিকে, বিকেলে বান্দরবান জেলা সদরের সুয়ালক ইউনিয়নে মুনলম পাড়ায় জুমের ফসল উৎসর্গ, নতুন ফসল প্রদর্শন ও পিঠা মেলার আয়োজন করা হয়।
 
এ সময় স্রো সম্প্রদায় তাদের ঐতিহ্য অনুসারে জুমের বিভিন্ন ফসলকে দেবতার উদ্দেশে সমর্পণ করে পূজা করে। অনুষ্ঠানে স্রো আদিবাসী তরুণ-তরুণীরা লোক সংগীত, লোক নৃত্য প্রদর্শন করে। আর এসব অনুষ্ঠান উপভোগ করতে দূরদুরন্ত থেকে বিভিন্ন আদিবাসীরা সমবেত হয়।
 
নবান্ন উৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও বিশিষ্ট ম্রো নেতা সিংইয়ং ম্রো জানান, বান্দরবানে প্রথম বারের মতো মুরংদের আয়োজনে নবান্ন উৎসব উদযাপন করা হচ্ছে। জুমের নতুন ফসল ঘরে তোলার আনন্দে ম্রো সম্প্রদায়ের জুমিয়ারা এ উৎসব পালন করে থাকে।  
 
বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় প্রতিবছর আদিবাসীরা পাহাড় থেকে জুম ফসল উত্তোলনকে কেন্দ্র করে এই নবান্ন উৎসব উৎযাপন করে থাকে বলেও জানান তিনি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৫   
এমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।