কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায় অনুষ্ঠিত হলো চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।
এ নৌকাবাইচ দেখতে নিকলী এলাকায় নির্মিত বেড়িবাঁধে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে।
সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় শেষ হয়।
এ সময় পুরো এলাকাজুড়ে ছিল অন্যরকম উৎসবের আমেজ। নিকলী উপজেলা প্রশাসন এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
আফজাল সুজের সৌজন্যে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা। এতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ১১টি নৌকা নিয়ে মাঝি-মাল্লারা অংশ নেন।
প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন, মোহরকোণা গ্রামের বজলু রহমান ও তার দল। প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়নসহ ৪টি বিজয়ী দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নিকলী-বাজিতপুর (কিশোরগঞ্জ-৫) নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য মো. আফজাল হোসেন।
এদিকে, নৌকাবাইচ শুরুর আগেই দূর-দূরান্ত থেকে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে, নেচে-গেয়ে আসতে শুরু করেন হাজারো হাওরবাসী। এ সময় মানুষের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠে সোয়াইজনী নদী ও আশপাশ।
অন্যদিকে, দুপুরের আগেই নৌকায় হাজারো ভাসমান দর্শক অবস্থান নেন। বাইচের সময় কাঁসার-ঘণ্টা, ঢাক-ঢোলের আওয়াজ ও মানুষের কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠে চারপাশ। মাঝি-মাল্লাদের পরনে ছিলো নানা রঙয়ের ঐতিহ্যবাহী পোশাক। শুরু থেকে শেষ প্রান্ত পর্যন্ত বাইচের দূরত্ব ছিলো প্রায় ৩ কিলোমিটার।
স্থানীয় সূত্র জানায়, হাওরের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত নিকলী এক সময় নৌকাবাইচের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। কিন্তু নানা কারণে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে চিরায়ত বাংলার এ ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিযোগিতা।
গত কয়েক বছর ধরে ‘হাওরের উৎসব’ বলে পরিচিত নৌকাবাইচ ফের শুরু হয়েছে। বছরের এ দিনটির জন্য সারাবছর অপেক্ষায় থাকেন হাওরবাসীর। এ প্রতিযোগিতাকে ঘিরে হাওরবাসীর মধ্যে দেখা দেয় আনন্দের জোয়ার।
নিকলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মাহবুব আলম বাংলানিউজকে জানান, এবারের নৌকাবাইচে প্রায় ৩ লাখ মানুষের সমাগম হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ বীরমুক্তিযোদ্ধা মাহবুব-উল-আলম, নিকলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কারার সাইফুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইসহাক ভূঁইয়াসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৫
এএটি/এসআর