ঢাকা, সোমবার, ২৭ মাঘ ১৪৩১, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

এক রাতেই স্কুল চলে গেল নদীগর্ভে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৫
এক রাতেই স্কুল চলে গেল নদীগর্ভে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লালমনিরহাট: ভাঙনের শিকার হয়ে এক রাতেই তিস্তা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া, পার্শ্ববর্তী ডাউয়াবাড়ি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিও হেলে রয়েছে।

যেকোনো মুহূর্তে নদীগর্ভে চলে যেতে পারে এ বিদ্যালয়টিও।

সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। গত দুই দিনে ওই এলাকার অর্ধশত বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। .
 
স্থানীয়রা জানায়, ঈদের পরদিন থেকে হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি গ্রামে হঠাৎ করে ভাঙন শুরু হয়েছে। একের পর এক বসত ভিটা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। ডাউয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির পাশে সোমবার বিকেলে ভাঙন শুরু হয়,  রাত না যেতেই এর একাংশ নদীতে বিলীন হয়ে যায়।
 
পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা ডাউয়াবাড়ি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টির একাংশ হেলে পড়েছে। মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরের মধ্যেই এর একাংশ নদীর মধ্যে চলে গেছে। বাকি অংশ নদীর মধ্যে বিলীন হওয়ার অপেক্ষায় আছে।
 
গত দুই দিনে তিস্তার ভাঙনে ডাউয়াবাড়ি গ্রামের মোরশেদা বেওয়া, মারুফ মিয়া, আবু বক্কার, আসাদুজ্জামান, এনামুল হক, আবিয়া বেওয়া, শামসুল, সফিয়ার, শিমুল, কালামসহ ওই গ্রামের অর্ধশত পরিবারের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে যায়।
 
ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েও তাদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সাড়া মেলেনি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো বসত ভিটা হারিয়ে আশ্রয়ের খোঁজে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।  

এদিকে, ঈদের ছুটি শেষে মঙ্গলবার প্রাথমিক বিদ্যালয় খুললেও পাঠদান হয়নি ডাউয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
 
ডাউয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। শিগগিরই টিনশেডের ঘর তৈরি করে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হবে।
 
ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বাবলা বাংলানিউজকে জানান, হঠাৎ ভাঙনে এসব পরিবার তাদের সহায় সম্বল হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। শুধু তাই নয়, ইতোমধ্যে ডাউয়াবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। পাশের নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিও ধীর ধীরে নদীতে ভেঙে পড়ছে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান।
 
হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান আতিকুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিকল্প ব্যবস্থা করে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে নিতে শিক্ষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
 
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করছে ইউনিয়ন পরিষদ। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার জন্য অস্থায়ী ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৫   
এমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।