রামু (কক্সবাজার): কক্সবাজারের রামু উপজেলার বৌদ্ধ বিহার ও জনবসতিতে বিভীষিকাময় হামলার ঘটনার তিন বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ।
৩ বছর আগের ২৯ সেপ্টেম্বরের ওই হামলার পর ইট-পাথরে নির্মিত সুসজ্জিত দৃষ্টিনন্দন বৌদ্ধ বিহার পেয়েছেন রামুর বৌদ্ধরা।
তবে এখন পর্যন্ত ওই ঘটনায় শাস্তি পায়নি কেউ। অনেককে গ্রেফতার করা হলেও বর্তমানে জামিনে রয়েছেন তারা। এ নিয়ে অসন্তোষ কাটেনি বৌদ্ধদের।
জানা যায়, ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উত্তম বড়– নামে এক বৌদ্ধ যুবকের বিরুদ্ধে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগে রামু বৌদ্ধপল্লীতে হামলা চালানো হয়। পরদিন উখিয়া, টেকনাফ ও চট্টগ্রামের লাখেরা গ্রামে বৌদ্ধবিহার ও জনবসতিতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা।
ভয়াবহ ওই হামলায় রামু উপজেলার ১২টি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার, ৩০টি বসতঘর, উখিয়া ও টেকনাফে ৭টি বিহার, ১১টি বসতঘর এবং পটিয়ার লাখেরা গ্রামে ১টি বিহার পুড়ে যায়।
এতে ধ্বংস হয়ে যায় তালপাতায় লিখিত বৌদ্ধদের পবিত্র গ্রন্থ ত্রিপিটক ও লুট হয় অসংখ্য বুদ্ধমূর্তি।
এ নিয়ে তুমুল আলোড়ন তৈরি হলে পরে এজাহারনামীয় ৩৭৫ জনসহ মোট ১৫ হাজার ১৮২ জনকে অভিযুক্ত করে ১৯টি মামলা করে পুলিশ।
বৌদ্ধদের অভিযোগ, বর্তমানে সবগুলো মামলার অভিযোগপত্র আদালতে পাঠানো হলেও প্রকৃত অপরাধীদের বেশিরভাগই অভিযোগপত্র থেকে বাদ পড়েছেন।
রামুর বৌদ্ধ যুবক মিথুন বড়–য়া বোথাম বাংলানিউজকে জানান, সেদিনের রাতের ধ্বংসযজ্ঞে শুধু প্রাচীন বৌদ্ধ পুরাকীর্তিই পোড়েনি। পুড়েছ দেশের মহামূল্যবান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটতে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, রামু, উখিয়া ও টেকনাফের ওই সহিংসতার মোট ১৯টি মামলায় ৯৪৫ জন এবং রামুর ৮টি মামলায় ৪৫৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, বৌদ্ধ বিহার ও বসতিতে হামলার ঘটনায় এসব মামলা রুজু করা হলেও কোন মামলায় কাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে বা বাদ দেওয়া হয়েছে এ নিয়ে পুরোপুরি অন্ধকারে রয়েছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়।
এসব বিষয়ে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মজিদ বাংলানিউজকে জানান, ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতের ঘটনার পর থেকে বৌদ্ধদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে পুলিশ। এছাড়া সেনাবাহিনী ও বিজিবির পক্ষ থেকেও নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৫
এসআর