ঢাকা: জঙ্গিবাদের নামে বাংলাদেশে পশ্চিমা দেশগুলোর নাগরিকদের ওপর রেড অ্যালার্ট জারিকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকায় একজন ইতালীয় নাগরিক খুন হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে তাদের নাগরিকদের সতর্ক করে রেড অ্যালার্ট দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশই শুধু নয়, এখন বিশ্ব জুড়েই এমন ভীতির পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে বিশ্বাস করে কোনো জঙ্গিবাদে বিশ্বাস করে না, ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে নিউইয়র্ক রয়েছেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের আগে কোন আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের সমর্থক যারা বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নয়ন চায় না, তারাই নির্ধারিত সময়ের আগে সাধারণ নির্বাচন চাইতে পারে।
তিনি বলেন, আওয়ামী যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, ততদিনই বাংলাদেশের উন্নয়ন গতি পাবে। যারা এই উন্নয়ন চায় না, তারা আগাম নির্বাচনের জন্য হৈ চৈ করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ব্যাপারে কারও উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী সদস্যবৃন্দ, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. আবদুল মোমেন ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
নিউইয়র্কে তার সফরকে সফল অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত ২০১৫ পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা সদস্য দেশগুলো বিশেষ করে দরিদ্র দেশগুলোর টেকসই উন্নয়নের জন্য একটি অত্যন্ত ‘গণমুখী’ লক্ষ্য।
ভারত, জাপান, নেদারল্যান্ডস ও চীনের সঙ্গে অত্যন্ত সফল দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলোকেও সফল বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
ঢাকায় ইতালীয় এক নাগরিক খুন হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই ঘটনার পর বিএনপি’র এক নেতা যেভাবে কথা বলছেন, তাতে সন্দেহ হচ্ছে তিনি নিজেই এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কি না। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তা বেরিয়ে আসতে পারে। ঢাকায় ফিরেই তিনি এই ব্যবস্থা নেবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, একটি রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠী মানুষ পুড়িয়ে মারে। মানুষ খুন করে একটা অস্বাভাবিক অবস্থা সৃষ্টি করতে চায়।
তিনি বলেন, একজন বিদেশি নাগরিক মারা যাওয়ায় সত্যি আমরা দুঃখিত। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। কিন্তু ওই ঘটনার পরপরই আমরা বিএনপির এক নেতাকে তৎপর দেখলাম। তাতে সন্দেহ হয়।
তাকে ধরে ইন্টেরোগেশন করা উচিত, এই ঘটনার সাথে তার কোনও সম্পৃক্ততা আছে কি না? এমন মত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দেশে ফিরে সেই ব্যবস্থাই করবেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী তার জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগদানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। পাশাপাশি স্থানীয় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
জাতিসংঘে বাংলাদেশে স্থায়ী মিশন কার্যালয়ে এই সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ঢাকার একটি কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান ওই বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ‘জুজুর’ শিকার হয়েছে বলে মন্তব্য করে বলেন, ‘সরকার পশ্চিমা বিশ্বের কাছে মৌলাবাদের কথা বলে যে খাল কেটেছে সেখানেই তারা ডুবেছে। তার প্রমাণ পেয়ে গেছে, গতকাল (সোমবার ২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে নিরপরাধ বিদেশি নাগরিক হত্যার মাধ্যমে। ’
** দুপুরে বাংলাদেশের সাইড ইভেন্ট, সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন
বাংলাদেশ সময় ০৯২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৫
এমএমকে