ঢাকা, সোমবার, ২৬ মাঘ ১৪৩১, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

কিবরিয়া হত্যা

প্রথম দিনে মামলার বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৫
প্রথম দিনে মামলার বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ শাহ এএসএম কিবরিয়া

সিলেট: অবশেষে আলোচিত সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএসএম কিবরিয়া হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়।


 
এদিন বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত মামলার ১৭১ সাক্ষীর মধ্যে প্রধান সাক্ষী তথা মামলার বাদী হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মজিদ সাক্ষ্য দেন।

এ সময় মামলার অন্যতম আসামি সিলেট সিটি করপোরেশনের বরখাস্তকৃত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার বরখাস্তকৃত মেয়র জিকে গৌছ ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের আইনজীবীরাও প্রধান সাক্ষীর সঙ্গে যুক্তিতর্ক করেন।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক মো. মকবুল আহসান আগামী ২১ এবং ২২ অক্টোবর মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করেন।

আদালতের বিচারক কিশোর কুমার কর বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বিচার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বুধবার মামলার প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। এদিন আরিফুল হক ছাড়া কারাগারে থাকা অন্য আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়।
 
সাক্ষ্য প্রদান শেষে মামলার বাদী আব্দুল মজিদ বাংলানিউজকে বলেন, এজাহারে যা উল্লেখ করেছি, সাক্ষ্য সেভাবেই দিয়েছি। আশা করি বিচারকাজ শেষে প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পাবেন।

তিনি বলেন, বৈদ্যের বাজারে সংঘঠিত হত্যাকাণ্ডের পর নিজের দায়বোধ থেকে মামলা করেছি। বঙ্গবন্ধুর খুনিরা দীর্ঘদিন পর শাস্তি পেয়েছে। একইভাবে দীর্ঘ ১০ বছর পর কিবরিয়া হত্যার বিচার শুরু হলেও প্রকৃত আসামিরা শাস্তি পাবে বলে আশাবাদী তিনি।

মামলায় আসামি আরিফুল হকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. লালা বাংলানিউজকে বলেন, সাক্ষীর বয়ানিতে যা উঠে এসেছে, তাতে আরিফুল হক চৌধুরী দায় মুক্ত হবেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় আরিফ ছাড়া অন্য ১৩ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।

কিবরিয়া হত্যার দশ বছর পর গত ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেট বিভাগীয় দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মকবুল আহসান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হরিছ চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সিলেট সিটি করপোরশেনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবগিঞ্জ পৌর মেয়র জিকে গৌছ, হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানসহ ৩২ জনকে অভিযুক্ত করে আলোচিত এ মামলার চার্জ গঠন করেন। মামলার ৩২ আসামির মধ্যে ১৪ জন কারাগারে, ৮ জন জামিনে এবং ১০ জন পলাতক রয়েছেন।

এর আগে নানা জটিলতায় দীর্ঘ দশ বছর আটকে ছিল এ মামলার বিচার কাজ। সর্বশেষ মামলার অন্যতম আসামি আরিফুল হকের অসুস্থতার কারণে নয় দফা পিছিয়ে যায় অভিযোগ গঠনের শুনানি।

২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদরের বৈদ্যের বাজারে এক জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। হামলায় নিহত হন কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী।

এ ঘটনায় ওই রাতেই হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা দায়ের করেন।

আলোচিত এ মামলায় তিন দফা তদন্তের পর তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির সিলেট অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার মেহেরুন নেছা পারুল ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর হারিছ, আরিফ, গউছসহ ১১ জনের নাম যোগ করে মোট ৩২ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন।

এরপর আরিফ ও গউছ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে বিচারক তা নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠান। সরকার তাদের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।

হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাবুল্লাহ মামলাটি বিচারের জন্য গত ১১ জুন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৫
এনইউ/এএএন/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।