ঢাকা, শনিবার, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বাংলানিউজকে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল

মেডিক্যাল ভর্তিচ্ছুদের মনোকষ্ট দূর করতেই হবে

সাজেদা সুইটি, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৫
মেডিক্যাল ভর্তিচ্ছুদের মনোকষ্ট দূর করতেই হবে ছবি: জি এম মুজিবুর/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ তুলে আন্দোলন করছেন ভর্তিচ্ছুরা। এ আন্দোলনকে ‘অযৌক্তিক’ বলতে একদমই নারাজ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।



তিনি বলছেন, প্রশ্নফাঁসে মনে খুব কষ্ট পেয়ে ভর্তিচ্ছুরা আজ আন্দোলনে নেমেছে, এটি অগ্রাহ্য করার কোন সুযোগ নেই। তাদের মনোকষ্ট দূর করতেই হবে।

শনিবার (৩ অক্টোবর) বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপে তিনি এ মত দেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রোববার (৪ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি দেবে বলে শুক্রবারই (০২ অক্টোবর) ঘোষণা দিয়ে রাখে।

প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তুলে মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজে ২০১৫’র ভর্তি পরীক্ষা বাতিল ও এ পরীক্ষাটি পুনরায় নেওয়ার দাবি তাদের।

এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জনপ্রিয় লেখক, পদার্থবিদ ও শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল বারবারই শিক্ষার্থীদের মনের অবস্থা বিবেচনায় গুরুত্ব দেন।

তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে, নাকি হয়নি- এটা এখন ম‍ুখ্য নয়। মুখ্য হল ভর্তিচ্ছুরা মনে আঘাত পেয়েছে। তাদের মনের কষ্ট গুরুত্বহীন নয়। এ কষ্ট সরকারকেই দূর করতে হবে।

জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক এবং কলাম-লেখক জাফর ইকবাল বলেন, তাদের (ভর্তিচ্ছু) আন্দোলন কেন? তারা পড়ালেখা করেছে, সুষ্ঠুভাবে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে একটি ভালো জায়গায় পড়তে চায়, ডাক্তার হতে চায়। নিজের ও পরিবারের স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার কষ্ট তাদের মনকে আঘাত করেছে। তাহলে সে বিষয়টি অবশ্যই সরকারকে ‘অ্যাড্রেস’ করতে হবে। ’

তিনি বলেন, এসব কোমলমতি শিক্ষার্থী এ কষ্ট আজীবন বয়ে বেড়াক- সেটা আমরা চাই না। আর যারা ফাঁস হওয়া প্রশ্নে ভর্তির সুযোগ পেলেন, তাদেরও মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে না। আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়ে যাবে। যারা ফাঁস হওয়া প্রশ্নে নয়, নিজ যোগ্যতায় সুযোগ পেল- দুর্নামের ভাগীদার তাদেরও হতে হবে। এ সবকিছুই ভাবতে হবে। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের অন্যায় পথে যেতে পারি না।

জাফর ইকবাল বলেন, শিক্ষার্থীরা সরকারের কাছে তাদের আবেদন তুলে ধরেছে। কারণ তারা বিশ্বাস করে, সরকার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেবে। শিক্ষার্থীদের বিশ্বাস সরকারকে রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের কথার গুরুত্ব বিবেচনা করতে হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতি জোর করতে পারি না যে কোন পরিস্থিতি মেনে নিতে। তাদের মতামত নিতে হবে। তাদের সুবিধা-অসুবিধা আমাদের বুঝতে হবে। তারাই এদেশের মূলশক্তি।

আশাবাদী এই শিক্ষক বলেন, সমস্যাগুলো এক সময় আমরা কাটিয়ে উঠবো বলে আমি মনে করি। সবাই সচেতন হলে আমরা সবকিছুই করতে পারি।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।   ২০ সেপ্টেম্বর অংশ নেওয়া ৮৩ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪৮ হাজার ৪৪৮ শিক্ষার্থী ভর্তিতে যোগ্য দেখিয়ে ফল ঘোষণা করা হয়।

পরদিন থেকে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ তুলে নিজেদের দাবি নিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু করে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৫
এসকেএস/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।