ঢাকা: মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয়ে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ তদন্তে প্রমানিত হওয়ায় সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (০৪ অক্টোবর) মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা মামলার চার্জশিট অনুমোদন দেয় কমিশন।
অনুমোদনের বিষয়টি দুদকের তদন্ত সূত্র বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছে।
তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, মনিরুজ্জামান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হওয়ার প্রত্যাশায় বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের বিজ্ঞপ্তির নিয়মাবলি ও শর্ত ভঙ্গ করে অসাধুভাবে প্রতারণার আশ্রয় নেন। এর অংশ হিসেবে আবেদনপত্রে মিথ্যা স্থায়ী ঠিকানা ও বাবা মুক্তিযোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও জাল মুক্তিযোদ্ধা সনদ বানিয়ে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (পিএসসি) দাখিল করেন। আর এ প্রক্রিয়ায় তিনি মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটায় পিএসসির সুপারিশপ্রাপ্ত হন।
পরবর্তী সময়ে পুলিশ ভেরিফিকেশনে ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ এ অংশটি এড়িয়ে যাওয়ার মাধ্যমে ২০১৪ সালের ১১ মে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পদে চাকরি পান।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তার বাবা মো. আব্দুল ছামাদ একজন কৃষক। তিনি কখনোই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। আর ঠিকানার বিষয়ে তদন্তে দেখা যায়, মনিরুজ্জামানের বাবা কখনো মানিকগঞ্জের সেওতা ও ছনক গ্রামে বসবাস করেননি। চাকরি লাভের অসৎ উদ্দেশ্যে বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা সাজাতে গিয়ে ওই অঞ্চলের ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করে পিএসসিতে আবেদন করেন। প্রকৃতপক্ষে তার স্থায়ী ঠিকানা মানিকগঞ্জের জেলার সাটুরিয়া থানার তেবাড়ীয়া গ্রামে।
২০১৪ সালের ১৩ জুলাই মো. মনিরুজ্জামান ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি পেয়েছেন, এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। অনুসন্ধানে দুদকের উপপরিচালক এস এম গোলাম মাওলা সিদ্দিকী অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় কমিশনের অনুমোদনক্রমে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি রাজধানীর রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তী সময়ে গোলাম মাওলা সিদ্দিকীকে তদন্তের দায়িত্ব দেয় কমিশন। আগস্টে তিনি অবসরে গেলে উপপরিচালক খন্দকার খলিলুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেয় কমিশন। তার তদন্তেও জালিয়াতির সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় চার্জশিটের অনুমোদন দেয় কমিশন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৫
এডিএ/জেডএস