ঢাকা: চার সরকারি কর্মকর্তাকে আসামি করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না পাওয়ায় রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলার বিচার কাজ ঝুলে গেছে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল বাংলানিউজকে জানান, গত ১ জুন এ মামলায় চার্জশিট হলেও চার সরকারি কর্মকর্তাকে আসামি করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না পাওয়ায় চার্জশিট আমলে গ্রহণ করতে পারছেন না আদালত।
রোববার (০৪ অক্টোবর) মামলাটিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরি আদেশের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তা আদালতে না আসায় ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজ জিন্নাত আগামি ৮ নভেম্বর সরকারি মঞ্জুরি আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
একই কারনে গত ১৮ আগস্ট মামলার চার্জশিটের গ্রহণযোগ্যতা শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
এর আগে গত ৮ জুলাই ইমারত আইনের মামলার চার্জশিট আমলে নিয়ে এ মামলায় পলাতক ৬ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
গত ১ জুন রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের করা দু’টি মামলায় হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনে পৃথক দুটি চার্জশিট দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সিনিয়র এএসপি বিজয় কৃষ্ণ কর।
কিন্তু কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের পর সাবেক উপ-প্রধান পরিদর্শক মো. জামশেদুর রহমান, পরিদর্শক প্রকৌশল মো. ইউসুফ আলী, মো. শহিদুল ইসলাম, ইমারত পরিদর্শক মো. আওলাদ হোসেনকে আসামি করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরি না পাওয়ায় যথাযথ মঞ্জুরিপত্র ছাড়াই তাদের এ মামলায় আসামি করে চার্জশিট দেন বিজয় কৃষ্ণ কর।
দুই মামলার দুই চার্জশিটে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা ও তার বাবা-মাসহ মোট ৪২ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে দণ্ডবিধির মামলায় ৪১ জন ও ইমারত নির্মাণ আইনের মামলায় ১৮ জন আসামি হয়েছেন।
মাহবুবুল আলম নামক একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীকে দণ্ডবিধির মামলায় আসামি করা হয়নি। ফলে দু’টি মামলা মিলিয়ে আসামি হয়েছেন মোট ৪২ জন।
চার্জশিটভূক্ত আসামিরা হলেন- ভবন মালিক সোহেল রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক ওরফে কুলু খালেক ও মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌর মেয়র রেফাত উল্লাহ, কাউন্সিলর মোহাম্মাদ আলী খান, প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, নিউওয়েব বাটন লিমিটেডের চেয়ারম্যান বজলুস সামাদ আদনান, নিউওয়েব স্টাইপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুর রহমান তাপস, ইথার টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ওরফে আনিসুজ্জামান, আমিনুল ইসলাম, সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. সারোয়ার কামাল, আবু বক্কর সিদ্দিক, মো. মধু, অনিল দাস, মো. শাহ আলম ওরফে মিঠু, মো. আবুল হাসান, সাভার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, নগর পরিকল্পনাবিদ ফারজানা ইসলাম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সাবেক উপ-প্রধান পরিদর্শক মো. আব্দুস সামাদ, উপ-প্রধান পরিদর্শক মো. জামশেদুর রহমান, উপ-প্রধান পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন, পরিদর্শক প্রকৌশল মো. ইউসুফ আলী, মো. শহিদুল ইসলাম, ইমারত পরিদর্শক মো. আওলাদ হোসেন, ইথার টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপণা পরিচালক জান্নাতুল ফেরদৌস, মো. শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, মনোয়ার হোসেন বিপ্লব, মো. আতাউর রহমান, মো. আব্দুস সালাম, বিদ্যুৎ মিয়া, সৈয়দ শফিকুল ইসলাম জনি, রেজাউল ইসলাম, নান্টু কন্ট্রাকটর, মো. আব্দুল হামিদ, আব্দুল মজিদ, মো. আমিনুল ইসলাম, নয়ন মিয়া, মো. ইউসুফ আলী, তসলিম ও মাহবুবুল আলম।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে নয়তলা ভবন রানা প্লাজা ধসে পড়লে ১ হাজার ১৩৬ জন মারা যান। ১ হাজার ৫শ ২৪ জন আহত হন।
ইমারত বিধি মেনে রানা প্লাজা নির্মাণ করা হয়নি- এমন অভিযোগে সাভার মডেল থানায় আরেকটি মামলা করেন রাজউকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল আহমেদ। রানাসহ ১৩ জন আসামি হন এ মামলায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৫
এমআই/বিএস