সাতক্ষীরা: আর কয়েকদিন পরেই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা।
আর এই উৎসবকে ঘিরে তোড়জোড়ের শেষ নেই প্রতিমা ও আলোকসজ্জা শিল্পী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে।
প্রতিমা শিল্পীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন রং তুলির আঁচড়ে প্রায় মাসাধিক সময় ধরে গড়ে তোলা দেবী দুর্গার সর্বোচ্চ সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে। একইভাবে ব্যস্ত ডেকোরেটরসহ আলোকসজ্জা শিল্পীরাও। যেন আলোকসজ্জা প্রতিযোগিতার খেলায় নেমেছেন তারা। অন্যদিকে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় স্তরে স্তরে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলছেন সংশ্লিষ্টরা।
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা সূত্র জানায়, জেলায় এ বছর ৫৬২টি পূজামণ্ডপে দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৫৪৪টি। অর্থাৎ এ বছর গতবারের তুলনায় ১৮টি বেশি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এসব মণ্ডপ সংশ্লিষ্ট এলাকায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশের সংশ্লিষ্ট শাখা ঝুঁকির দিক দিয়ে ৯২টিকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ১৪২টিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
সূত্র জানায়, জেলার আশাশুনি উপজেলায় ১শ’টি পূজা মণ্ডপে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে পাঁচটি ও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ১৮টিকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
একইভাবে শ্যামনগর উপজেলায় ৬৪টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে ১৩টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ১৬টি গুরুত্বপূর্ণ, কলিগঞ্জ উপজেলায় ৫২টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে ২২টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ২৫টি গুরুত্বপূর্ণ, দেবহাটা উপজেলায় ২০টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে পাঁচটি অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ, সদর উপজেলায় ১০৪টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে ১১টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ২২টি গুরুত্বপূর্ণ, কলারোয়া উপজেলায় ৪২টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে ২৩টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ এবং তালা উপজেলার দু’টি থানার মধ্যে তালা থানায় ১০৬টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে ১৩টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ১৯টি গুরুত্বপূর্ণ এবং পাটকেলঘাটা থানায় ৭৪টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে ২৪টিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট অনিত কুমার মুখার্জী বাংলানিউজকে জানান, আমরা আশা করছি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে জেলায় শারদীয় উৎসব উদযাপিত হবে। পুলিশ ও সিভিল প্রশাসন আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে সর্বোচ্চ তদারকি করছে।
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে পালনের সুবিধার্থে সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি পূজা মণ্ডপে কমিউনিটি পুলিশ, আনসার ও পূজা উদযাপন কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে।
বিট কর্মকর্তারা নিজ নিজ বিট তদারকি করবেন। এছাড়া অতি গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে বিবেচিত কয়েকটিতে তিনজন করে পুলিশ সদস্য সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে। বিশেষ নজরদারিও থাকবে। পাশাপাশি জেলার সর্বত্র পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা টহল দেবেন। একই সঙ্গে জেলার অন্যান্য উপজেলায় দুইজন ও সদর উপজেলায় একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে থাকবে। আশা করছি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৫
আরএ