ঢাকা: হাতে শাঁখা, কপালে সিঁদুর নিয়ে মায়াবতী চেহারায় মনের মতো কাপড় খুঁজছেন শঙ্করী সাহা। বাবার বাড়ি ভারতে, স্বামীর বাড়ি এদেশে।
বসুন্ধরা সিটির ‘দেশী দশে’ ঘুরতে ঘুরতে বাংলানিউজকে জানান, এরই মধ্যে মায়ের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ির নারী আত্মীয়দের জন্য জামদানি শাড়ি কিনে পাঠিয়েছেন। কিনেছেন নিজের জন্যও- লাল জামদানি।
স্বামী ও ছেলের জন্য একই রকম পাঞ্জাবি আর ধুতি কিনলেন ফ্যাশন হাউজ ‘রঙ’ থেকে।
ধানমন্ডির এ বাসিন্দা বলেন, বেইলী রোডের টাঙ্গাইল কুটির থেকে কেনাকাটা করেছি বেশ কিছু। ৬ষ্ঠী থেকে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও অষ্টমী আর নবমীতে বেশি জাঁকজমক হয়। রয়েছে কুমারি পূজাও। দশমীতে লাল শাড়ি পড়তে বেশি পছন্দ করেন ঘরের বৌরা। এমনিতেই পূজায় লাল-সাদা-সোনালী রঙের প্রাধান্য থাকে। আর সুতি ও হাফ সিল্ক পোশাক বেশি চলে।
একই মত ‘রঙ’র ম্যানেজার মো. জাহাঙ্গীর আলম হীরার। তিনি বলেন, উজ্জ্বল রঙ বেশি পছন্দ করেন ক্রেতারা। তাদের পছন্দের দিকে নজর রেখেই দেশী বুটিকগুলোতে কাপড় রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, পূজার শাড়িগুলো পাওয়া যাচ্ছে দেড় হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকার মধ্যে। পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকায়। শিশুদের ধুতি সাড়ে ৯শ’ টাকায় এবং বড়দের ধুতি সাড়ে ৯শ’ থেকে আড়াই হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
জাহাঙ্গীরও বলেন, অষ্টমী থেকে পূজার সাজসজ্জায় বেশি উজ্জ্বল রাখেন পূজার্থীরা। কপালে সিঁদুর, হাতে শাঁখা, লাল-সাদা শাড়ির কম্বিনেশন পূজায় কমন বিষয়। যারা শাড়ি পরবেন না, তাদের সালোয়ার কামিজেও কড়া রঙ এনে পূজার পোশাক হিসেবে রাখা হয়েছে বিভিন্ন বুটিকে।
বেচা-বিক্রি গত পূজায় এবারের চেয়ে বেশি ছিল বলে জানান তিনি। বলেন, গত বছর ঈদ ও পূজা কাছাকাছি সময়ে ছিল। তাই বিক্রি বেশি হয়েছিল। কিন্তু এবার তেমন নয়। কেউ কেউ কেনাকাটা করছেন। একজন সেদিন এসে নিজের জন্যই ৫টি শাড়ি নিলেন। ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত একেক দিন একটি করে শাড়ি পরবেন বলে জানালেন।
একেক বুটিক একেক বিষয়বস্তু নিয়ে পূজার পোশাক তৈরি করেছে বলে জানালেন জাহাঙ্গীর।
শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটেও পূজার পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। কোথাও কোথাও ছাড়ের কথাও জানালেন বিক্রেতারা। দেশীয়, ঐশী, নন্দন কুটিরে দেখা গেলো গাড়ো রঙের পোশাকে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন ক্রেতারা।
বিক্রেতারা জানান, পহেলা বৈশাখের ধাঁচে করা পোশাক কিনছেন তরুণ-তরুণীরা।
বেইলী রোডের বিক্রেতারা জানান, কাপড়ে জামদানির কাজ বেশ পছন্দ করছেন অভিজাত ক্রেতারা। রঙের দিকে লালই প্রধান পছন্দ নারীক্রেতাদের।
বসুন্ধরা সিটিতে কাপড়ের পাশাপাশি গহনা কেনার প্রতিও আগ্রহ দেখা গেলো পূজার্থীদের। চুড়ি ও গলার অলঙ্কার বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা।
এদিকে মিরপুর বেনারসি পল্লী, মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের বুটিক হাউজে পাওয়া যাচ্ছে পূজার বিভিন্ন ধরনের পোশাক। এছাড়া আড়ং, নবরূপায় রয়েছে পূজার সঙ্গে মানানসই কাপড়।
ঈদের মতো পূজায়ও এমন কাপড় রয়েছে যা উৎসবে যেমন মানাবে, তেমনি অন্য সময়ও ব্যবহার করা যাবে বলে জানান বিক্রেতারা। সবাই অবশ্য তৈরি পোশাকের দিকে আকৃষ্ট নন বলেও জানান তারা। বলেন, কেউ কেউ কাপড় কিনে দর্জিঘরে ছোটেন, নিজের পছন্দে সাশ্রয়ে পোশাক বানিয়ে নেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৫
এসকেএস/আইএ