শেরপুর (বগুড়া) থেকে ফিরে: আগামী ১২নভেম্বর বগুড়ায় সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এই সফর ঘিরে বগুড়াবাসীর মত শেরপুর উপজেলাবাসীর প্রত্যাশার কোন কমতি নেই।
প্রায় দেড়শ’ বছরের পুরনো পৌরসভা হওয়ার পরও এখানে কোন সরকারি কলেজ ও বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। নেই কোন খেলাধুলার মাঠ। আনন্দ ও বিনোদন করার মত কোন ব্যবস্থা নেই এখানে। দীর্ঘদিনের জমানো এসব দাবি পূরণে প্রধানমন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন উপজেলাবাসী।
তবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে শেরপুরবাসীর চাওয়া একটু বেশি। কেননা অনেক প্রত্যাশা নিয়ে তারা নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। দীর্ঘ কয়েক যুগ বিএনপির দখলে থাকা বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনটি আওয়ামী লীগকে উপহার দিয়েছেন এই উপজেলার মানুষ।
মঙ্গলবার (১০নভেম্বর) শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে কথা হলে এসব তথ্য ওঠে আসে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার বাংলানিউজকে জানান, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর উপলক্ষে আয়োজিত জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করা হবে। এ জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এই জনসভার মাধ্যমেই প্রমাণ করা হবে বগুড়া বিএনপির ঘাঁটি নয়, এটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি।
শেরপুরবাসীর বিভিন্ন দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে তিনি জানান, জনসভায় নেত্রীর কাছে এ উপজেলাবাসীর ন্যায্য দাবিগুলো উপস্থাপন করা হবে। কারণ দলের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুষম উন্নয়নে বিশ্বাস করেন। তাই শেরপুরবাসীর দাবিগুলো তিনি অবশ্যই পূরণ করবেন বলে এই নেতা আশা প্রকাশ করেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ বাগচি বাংলানিউজকে জানান, দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা পরপর দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বগুড়ায় এটাই তার প্রথম সফর। তাই এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সফরের মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের অনেক আশা আকাঙ্খারই প্রতিফলন ঘটবে। পাশাপাশি শেরপুরবাসীর যৌক্তিক দাবিগুলো প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরা হবে বলে আওয়ামী লীগের এই নেতা জানান।
শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি নিমাই ঘোষ বাংলানিউজকে জানান, বিপুল শিল্প সম্ভাবনাময় ও বাণিজ্যিক শহর হিসেবে পরিচিত এ উপজেলা। কারণ গেল দেড় যুগের ব্যবধানে এখানে নতুন নতুন অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। ভারী, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পকারখানা স্থাপিত হয়েছে। অথচ এ উপজেলার বুক চিরে বগুড়ায় গ্যাস গেলেও এখানকার মানুষ আজো গ্যাস পায়নি। গ্যাসের দাবিতে বিভিন্ন সময় সচেতন শেরপুরবাসীর ব্যানারে সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কিন্তু শেরপুরবাসীর প্রাণের সেই দাবি পূরণ হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফরে শেরপুরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের আশাবাদ ব্যক্ত করেন সাংবাদিক নেতা নিমাই ঘোষ।
শেরপুর পৌরসভার কাউন্সিলর আব্দুল বারী ও শাহাবুল করিম বাংলানিউজকে জানান, শেরপুর পৌরসভার দেড়শ’ বছরের পুরনো একটি পৌরসভা। বগুড়া পৌরসভার একদিন আগে শেরপুর শহরটি পৌরসভা হিসেবে উন্নীত হয়।
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো এখানে বিনোদনের কোন ব্যবস্থা নেই। খেলাধুলার জন্য একটি স্টেডিয়ামও নেই। সরকারি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। তাই গ্যাস সংযোগ দেওয়ার পাশাপাশি প্রায় দেড়শ’ বছরের পুরনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শেরপুর ডিজে হাইস্কুল এবং শেরপুর ডিগ্রী কলেজকে সরকারিকরণের দাবি জানান এই দুই জনপ্রতিনিধি।
বাংলাদেশ সময়: ১২০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৫
এমবিএইচ/আরআই