রাজশাহী: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের সৈয়দপুর চকপাড়া আহমেদিয়া জামে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর মরদেহ অবশেষে বেওয়ারিশ হিসেবেই দাফন করা হয়েছে।
ঘটনার তিনদিনেও তার নাম পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
রোববার (২৭ ডিসেম্বর) বাদ যোহর রাজশাহীর হেতমখাঁ গোরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়। এর আগে হেতমখাঁ গোরস্থান মসজিদে নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
রাজশাহীর বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কাছে মরদেহটি হস্তান্তর করেন। পরে তিনি বাংলানিজকে বিষয়টি জানান। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা ছিল।
পরিচয় শনাক্ত করতে না পারায় রোববার দুপুর ১২টার দিকে হামলাকারীর মরদেহ দাফনের জন্য রাজশাহীর কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে বাংলানিজকে জানান, ফাউন্ডেশনের অর্গানিয়ার এনায়েত কবীর মিলন।
তিনি জানান, বেওয়ারিশ হিসেবে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের খরচে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
এর আগে শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে নিহত অজ্ঞাত পরিচয় বোমা বহনকারীর মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্তের পর মসজিদে নিহত যুবকই বোমা বহনকারী বলে নিশ্চিত হন চিকিৎসক।
নিহতের ময়নাতদন্ত শেষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. এনামুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ওই যুবক বোমার আঘাতেই মারা গেছেন। কারণ তার শরীরে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এছাড়া ময়নাতদন্তের সময় তার লিভার থেকে চারটি স্প্লিন্টার বের করা হয়েছে। বোমাটি বাম পাশে থাকায় তার শরীরের বাম অংশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাম হাতও ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। সবমিলিয়ে নিহত যুবকই বোমা বহনকারী বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
এদিকে, শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) ঘটনার দিন রাতে অজ্ঞাতদের আসামি করে বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করলেও এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এছাড়া তদন্তের স্বার্থে মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে মুখ খুলতে চাচ্ছে না পুলিশ। তবে জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সংশ্লিষ্টতা আছে কি-না এটিসহ বিভিন্ন কারণ বর্তমানে খতিয়ে দেখছেন পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
গত শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের সময় রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের সৈয়দপুর চকপাড়া আহমেদিয়া জামে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলায় নিহত হন হামলাকারী।
এ সময় আরও ১০ জন আহত হন। এদের মধ্যে তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে বর্তমানে তারা আশঙ্কামুক্ত।
তারা হলেন- বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের সৈয়দপুর চকপাড়া গ্রামের ভলয় তালুকদারের ছেলে ময়েজ উদ্দিন (৪০), বলয় তালুকদারের ছেলে সাহেব আলী (৩৬) ও একই গ্রামের মুকুল হোসেনের ছেলে নয়ন (১২)। এর মধ্যে ময়েজ উদ্দিন ও সাহেব আলী পরস্পর চাচাতো ভাই। আর নয়ন উপজেলার মচমইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। বাকিদের বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৫
এসএস/জেডএস