ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ভিসা আবেদনে দুই মাসেও সাড়া দিচ্ছে না থাই দূতাবাস

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৬
ভিসা আবেদনে দুই মাসেও সাড়া দিচ্ছে না থাই দূতাবাস ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: দুই মাসেও ভিসা আবেদনে সাড়া দিচ্ছে না ঢাকাস্থ থাই দূতাবাস। দূতাবাসের গরিমসি ও তাচ্ছিল্যের শিকার হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।

এদের কেউ চিকিৎসার জন্য কেউ ব্যবহার প্রয়োজনে কিংবা কেউ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে থাইল্যান্ড যাওয়ার পরিকল্পনা করে যেতে ব্যর্থ হয়েছেন।

দায়িত্বশীল সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে ভিসা আবেদনকারীদের অন্তত ৯০ শতাংশই দুই মাসের বেশি সময় ধরে ভিসার অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে তার চেয়েও উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে- দূতাবাসে পাসপোর্ট আটকে থাকা। ভিসা না দেওয়া হলে পাসপোর্ট ফেরত চেয়েও ব্যর্থ হয়েছেন অনেকে।

সবমিলিয়ে ঢাকাস্থ থাই দূতাবাস যথেচ্ছাচার শুরু করেছে, যা বিপাকে ফেলেছে অনেককেই। সূত্র জানিয়েছে অন্তত ২০ হাজার পাসপোর্ট আটকা রয়েছে দূতাবাসের কাছে।

দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, থাই ইমিগ্রেশন বিভাগ ভিসা পদ্ধতিতে নতুন কিছু পরিবর্তন আনার কারণেই এমনটা হচ্ছে। যে কোনো ভিসার আবেদন ব্যাংকক থেকে অনুমোদন পেতে হয়। আবেদনের প্রতিটি কাগজপত্র পরীক্ষা করে তবেই ছাড় দেওয়া হয়। তবে এই অব্যবস্থাপনার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে , থাই দূতাবাসে কোনো রাষ্ট্রদূত না থাকাকে। প্রায় তিন মাস ধরেই এই দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত নেই। আগামী মার্চের আগে ঢাকায় নতুন রাষ্ট্রদূত আসার সম্ভাবনাও নেই। একজন কাউন্সিলর চার্জ দ্য এফেয়ার্সের দায়িত্বে রয়েছেন।

গত দুই মাসে যে ১০ শতাংশের পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হয়েছে, কিংবা যাদের ভিসা দেওয়া হয়েছে তাতেও ছিলো শম্বুক গতি, ফলে অনেকেই সময় বা প্রয়োজন ফুরিয়ে যাওয়ায় দেশটিতে ভ্রমণ করতে পারেননি।

কেন ভিসা দেওয়া হচ্ছে না, কিংবা পাসপোর্ট আটকে রাখা হচ্ছে, সে বিষয়ে কোনও জবাব মিলছে না থাই দূতাবাস থেকে। তবে একটি সূত্র জানায়, দূতাবাসে নতুন ভিসা কর্মকর্তা যোগ দেওয়ার পর থেকেই এই অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। গত ডিসেম্বরেই ওই কর্মকর্তা যোগ দেন। তার যোগদানের আগে আবেদনের চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই ভিসা পাওয়া যেতো, ভিসা না পেলেও তা জানিয়ে দিয়ে পাসেপোর্ট ফেরত দেওয়া হতো। কিন্তু এখন দুই মাসেও সাড়া মিলছে না।

থাইল্যান্ডের ভিসা প্রসেসের জন্য নির্দিষ্ট এজেন্ট ভিএফএস গ্লোবালও দূতাবাসের এই আচরণে বিষ্মিত। তাদের কাছেও  আবেদনকারীদের পাসপোর্ট ও ভিসা না দেওয়ার বিষয়ে কোনও তথ্য নেই।

ভিসা জটিলতার কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। অনেকের রয়েছে দেশটির সঙ্গে আমদানি রপ্তানির সম্পর্ক। দীর্ঘদিন ধরে দেশটিতে যাওয়া আসা করার পরেও তাদের ভিসা আবেদন আটকে থাকছে। এতে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া চিকিৎসা নিতে যাওয়ার জন্য অনেকেই চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আর পর্যটনের এই মওসুমে বাংলাদেশের অনেকেই দেশটিতে বেড়াতে যান, তারাও যেতে পারছেন না।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ অন্য শিল্প পণ্যের আন্তর্জাতিক ক্রেতারা থাইল্যান্ডে মিটিং করতে পছন্দ করেন। সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সেখানে যেতে হয়।
অনেকের সেখানে রয়েছে আঞ্চলিক অফিসও। এই ভিসা জটিলতায় সেক্ষেত্রেও ক্ষতি হচ্ছে। এ অবস্থায় কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে ভিসা সমস্যা দূর করতে মনোযোগী হওয়ার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই।

বাংলাদেশ সময় ০৯২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৬
এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।