ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

‘একুশ নিয়ে ভালো ইতিহাস বা সাহিত্য রচিত হয়নি’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৬
‘একুশ নিয়ে ভালো ইতিহাস বা সাহিত্য রচিত হয়নি’ ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ভালো ইতিহাস বা সাহিত্য রচিত হয়নি, বলেছেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মেজবাহ কামাল।

শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম) মিলনায়তনে আয়োজিত ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিষয়ক দ্বাদশ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে- ইতিহাস একাডেমি।

মেজবাহ কামাল বলেন, বাঙালির শেকড় সন্ধান করতে হলে আদিবাসীদের কাছে যেতে হবে। তাদের কাছ থেকেই আমাদের গ্রামীণ জীবন ব্যবস্থার সব কিছু এসেছে। কিন্তু কালে কালে শাসকরা তাদের শাসনকে প্রলম্বিত করার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে আমাদের বিভক্ত করার চেষ্টা করেছে।

তিনি আরও বলেন, বৃটিশরা চলে যাওয়ার সময় প্রশ্ন তোলা হয়েছিলো- বাঙালি মুসলমানের ভাষা কী? তখন আরবিকে বাঙালি মুসলমানের ভাষা করার চেষ্টা হয়েছিলো। এরপর পাকিস্তান আমলে উর্দুকে চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা হয়েছিলো। এ অঞ্চলের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলমান- সবাই বাঙালি। প্রকৃতি আমাদের যে পরিচয় দিয়েছে, তা মুছে দেওয়ার চেষ্টায় কেউ সফল হয়নি। কিন্তু এই ভাষার জন্য আমাদের রক্তদানের যে ইতিহাস তা নিয়ে ভালো ইতিহাস বা সাহিত্য রচিত হয়নি আজ পর্যন্ত।

ভাষা আন্দোলন আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই আন্দোলনের ফলে আমরা পেয়েছি অসাম্প্রদায়িক চেতনা। যে শহীদ মিনার পেয়েছি, তা সব সময় আমাদের অসাম্প্রদায়িকতার গান শোনায়। এজন্যই ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্ব। কিন্তু যখন অন্য ছোট ছোট নৃ গোষ্ঠীর ভাষাকে আমরা স্বীকৃতি দিতে পারি না, তখন আমাদের এই অর্জন ম্লান হয়ে যায়। এদেশে ৪৩টি ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু এদের স্বীকৃতি নেই।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক কে এম মোহসীনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, নায়েম’র মহাপরিচালক অধ্যাপক হামিদুল হক। এছাড়া ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ও শ্রীলঙ্কা থেকে সিনিয়র শিক্ষক ও গবেষকরা এতে অংশ নেন।

মূলত ইতিহাসবিদ ও গবেষকদের জ্ঞানের পারস্পরিক আদান-প্রদানের লক্ষ্যেই এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

বক্তারা বলেন, পৃথিবী সব দেশেই ইতিহাসকে ধারণ ও লালন করা হয়। কিন্তু আমাদের এখানে তা না করে বরং বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ইতিহাসকে ধারণ না করলে জাতি এগুতে পারে না। তাই এ বিষয়টিতে গুরুত্বের সঙ্গে নজর দিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৬
ইইউডি/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।