ঢাকা: ক’দিন বাদেই মহান একুশ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ভাষার জন্য বুকের তাজা রক্ত দিয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আনার দিন।
একুশের স্মৃতি নিয়ে শহীদ মিনার, আর বাংলাসহ হাজারো ভাষার স্মারক নিয়ে গড়ে ওঠা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণও এখন মহাব্যস্ত, ব্যস্ত ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।
ধুয়ে-মুছে রঙ লাগিয়ে ঝকঝকে তকতকে করে তোলা হচ্ছে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় অবস্থিত এ ইনস্টিটিউট। চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় দেশি-বিদেশি অতিথিরা অংশ নেবেন সেখানে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ইউনেস্কোর ক্যাটাগরি-২ এর মর্যাদা পাওয়ায় এবার ইনস্টিটিউটের কাছে দিনটি বিশেষ তাৎপর্য নিয়ে পালিত হবে।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রমনা পার্কের বিপরীতে ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে-বাইরে চলছে ধোয়া-মোছার কাজ। অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে অডিটরিয়াম, চলছে তৃতীয়তলার অসমাপ্ত কাজ।
প্রবেশ পথে ঢুকতেই চোখ পড়ে বৃত্তাকার ভবনে, নানান ভাষার চিহ্ন দিয়ে ঘেরা দেয়ালে ইংরেজি হরফে ইনস্টিটিউটের নাম ফলক লাগানোর কাজ করছেন এক কর্মী। ভবনের ছাদে আরও কয়েকজন। প্রবেশ পথের নিরাপত্তাকর্মী কৃষ্ণ সরকার বাংলানিউজকে বলেন, এই তো ক’দিন, মাতৃভাষা দিবস। ধুয়ে-মুছে সব পরিস্কার করা হচ্ছে। কয়েকদিন আগে থেকেই শুরু হয়েছে এ কাজ।
একটু এগিয়ে গিয়ে দেখা যায়, অডিটরিয়ামে প্রবেশপথে ৠাম্প (হুইল চেয়ার প্রবেশপথ) তৈরি করছেন তিনজন শ্রমিক। তাদের একজন মাসুদ রানা বাংলানিউজকে বলেন, বৃদ্ধ এবং প্রতিবন্ধীরা হুইল চেয়ার নিয়ে আসেন, তাদের যেন কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য চলার সিঁড়ি বানানো হচ্ছে।
এর পাশেই ভাষা দিবসের জন্য বিভিন্ন বোর্ড, প্লাকার্ডে রঙ করছেন আরেক কর্মী। তিনি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠানমালার জন্য তাদের প্রস্তুতি।
এতোদিন দ্বিতীয়তলা পর্যন্ত থাকলেও এখন তৃতীয়তলা পর্যন্ত কাজ চলছে পুরোদমে। সেখানে ভাষার সংরক্ষণ ও প্রমিতায়ন কেন্দ্র, গ্রন্থাগার, আর্কাইভ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য কক্ষ থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ২১ ফেব্রুয়ারি ইউনেস্কোর ক্যাটাগরি-২ এর চুক্তিপত্র তুলে দেওয়া উপলক্ষে এদিন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. জীনাত ইমতিয়াজ আলী বাংলানিউজকে বলেন, চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় ভারত, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের অতিথি অংশ নেবেন।
অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে শেষ দিকের প্রস্তুতি চলছে, একুশে ফেব্রুয়ারির আগেই প্রস্তুত করা হবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণ।
২২ ফেব্রুয়ারি একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার ও প্যানেল ডিসকাশন, ২৩ ফেব্রুয়ারি চারটি জাতীয় সেমিনার, ২৪ ফেব্রুয়ারি শিশুদের জন্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৬
এমআইএইচ/জেডএস