ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

মমেক হাসপাতালের ভেতরেই অস্বাস্থ্যকর গণগোসলখানা!

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৬
মমেক হাসপাতালের ভেতরেই অস্বাস্থ্যকর গণগোসলখানা! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ফুলবাড়িয়া উপজেলার বাসিন্দা জ্যোতি সরকার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন। তিনদিন ধরে তার সঙ্গে দুই অভিভাবকও রয়েছেন হাসপাতালে। প্রতিদিন গোসল সারতে হয় হাসপাতালের পাশে স্বজনের বাড়িতে।

ময়মনসিংহ: ফুলবাড়িয়া উপজেলার বাসিন্দা জ্যোতি সরকার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন। তিনদিন ধরে তার সঙ্গে দুই অভিভাবকও রয়েছেন হাসপাতালে।

প্রতিদিন গোসল সারতে হয় হাসপাতালের পাশে স্বজনের বাড়িতে।

হাসপাতালের শৌচাগারগুলোর দূরাবস্থার কারণে সেখানে গোসল করা সম্ভব নয়। ফলে বাধ্য হয়েই তাদের গাইনি ওয়ার্ডের পাশে খোলা আকাশের নিচে কলতলায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গোসলের কাজ সারতে হচ্ছে। আবার সেটির অবস্থাও স্যাঁতস্যাঁতে।

চারদিকে নোংরা পরিবেশ আর উৎকট গন্ধ। নিয়মিত পরিস্কার না করায় শ্যাওলায় ঢাকা পড়েছে কলতলা। এতে করে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। এমন দুর্ভোগ, যন্ত্রণা সত্ত্বেও শুধু জ্যোতির অভিভাবককেই নয়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেশিরভাগ রোগীর অভিভাবকদের এ দুর্গন্ধময় পরিবেশ মেনে নিতে হয়েছে।

এখানেই প্রতিদিন গোসল থেকে শুরু করে কাপড় কাঁচা, কাপড় শুকানো ও খাবারের পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে তাদের। এতে করে পরিবেশ দূষণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে হাসপাতালের এ গোসলখানাটি! হাসপাতালের সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে।

শনিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এ কলতলা ও অঘোষিত গোসলখানায় অবস্থানরত রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এমনই তথ্য জানা যায়।

গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীরা জানান, হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডেই শৌচাগার রয়েছে। তবে, সেগুলোর অপরিচ্ছন্ন। দুর্গন্ধে দম বন্ধ হবার অবস্থা।

সেখানে কোনো মতে, শৌচকর্ম সারা গেলেও গোসলের উপযুক্ত পরিবেশ নেই। ফলে বিপদগ্রস্ত মানুষেরা ৪ নম্বর গাইনি ওয়ার্ডের ঠিক পাশেই খোলা আকাশের নিচে ওই কলতলায় গোসল সম্পন্ন করছেন।

গাইনি ওয়ার্ডের পাশাপাশি আরো বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের রোগীর স্বজনেরা এখানে গোসল, কাপড় কাঁচা ও কাপড় শুকানোর কাজ করেন বলে জানান গৌরীপুর থেকে আসা এক রোগীর স্বজন।

হাসপাতালের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা শৌচাগারসমূহ পরিচ্ছন্ন রাখতে কাজ করলেও মানুষের ভিড়ের চাপে এগুলোর দূরাবস্থাই চোখে পড়ে।

ফলে, বেশিরভাগ রোগীর সঙ্গে থাকা স্বজনেরা সেদিকে না গিয়ে এ কলতলাতেই পানির ট্যাঙ্কির পাইপ দিয়ে বের হওয়া পানিতে গোসল সারেন।

তবে, চোখে পড়লো নিয়মিত পরিস্কার না হওয়ায় শ্যাওলায় ঢাকা পড়েছে পানি সংরক্ষণাগার (ট্যাঙ্কি)। অনেকেই এ পানিকে আবার দূষিত মনে করে নাক ছিটকান। পানি পান করতেও চান না। কিন্তু যাদের কাছে এর বিকল্প নেই, তাদের ছুটতে হচ্ছে এখানে।

রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, পানির ট্যাঙ্কির পাইপ লাইনেও জং ধরেছে। কলতলা ও গোসলখানার চেহারা দেখেই বোঝা যায় কতটা অস্বাস্থ্যকর হাসপাতালের পরিবেশ।

বেগতিক পরিস্থিতির কারণে অনেকেই বাধ্য হয়ে টাকার বিনিময়ে হাসপাতালের বাইরে থেকে বিশুদ্ধ পানি কিনে আনছেন।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (অর্থ) লী নারায়ণ বাংলানিউজকে বলেন, বিভিন্ন ওয়ার্ডের সংস্কার কাজ চলছে।   এ কাজ শেষ হলেই রোগী ও স্বজনদের সুবিধার্থে শৌচাগার ও গোসলখানা তৈরি করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৬
এমএএএম/ওএইচ/পিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।