দুবলার চর (সুন্দরবন) থেকে: শত বছর আগে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অবতার শ্রীকৃষ্ণ অসুর বধ করেছিলেন। পরে স্বপ্নে পাপমোচন ও পূণ্যলাভে গঙ্গাস্নান করার আদেশ পেয়ে এক পূর্ণিমা তিথিতে বৃন্দাবনে রাস লীলায় মেতেছিলেন তিনি।
সেই থেকেই বৃন্দাবনে রাস পূর্ণিমায় পূণ্যস্নানের রীতি তৈরি হয়েছে। তবে সেই বৃন্দাবন এখন ভারতের উত্তরপ্রদেশের অংশ। সীমানা ভাগ হলেও ভাগ হয়নি ধর্মীয় রীতি।
তাই তো, সে রীতি মানার জন্যে বৃন্দাবনের বিকল্প হিসেবে দুবলার চরকে বেছে নিয়েছেন বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবালম্বীরা। বঙ্গোপসাগরের বুকে এ চরেই রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে পুজো আর পূণ্য স্নান করতে আসছেন তারা।
তবে পূণ্যার্থীদের মতে, দেশ ভাগের আগে থেকেই এ অঞ্চলের হিন্দুরা বৃন্দাবনের বিকল্প হিসেবে দুবলার চরে রাস মেলার আয়োজন করতেন।
সে হিসেবে প্রায় তিনশ’ বছর ধরে এ অনুষ্ঠান দুবলার চরে আয়োজিত হয়ে আসছে। আর সে আয়োজনকে কেন্দ্র করেই এখানবার রাস মেলা বৃহৎ আকার ধারণ করেছে।
বিভিন্ন ধর্মের মানুষের সমাগম একে অসাম্প্রদায়িক রূপ দিয়েছে। রাস উৎসব সম্পর্কে দুবলার চরে অবস্থিত মন্দিরের পুরোহিত সুবাস সরকার বাংলানিউজকে বলেন, ‘রাস হলো ভগবান শ্রী কৃষ্ণের অনুষ্ঠান। তাপার কলি সন্ধিক্ষণে শ্রীকৃষ্ণ আবির্ভূত হন ভারতবর্ষের মথুরা রাজ্যের কংসের কারাগারে। তিনি অসুর বধ করে সাম্রাজ্যের অধিকার করেন। এ উপলক্ষে বৃন্দাবনে আনন্দ উৎসব অর্থাৎ রাস করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। ’
তিনি বলেন, শ্রীকৃষ্ণ বলে গেছেন-যে তার প্রচারিত ধর্মের পক্ষে থাকবে তার মঙ্গল হবে আর বিপক্ষে যে থাকবে তার বিনাশ হবে। ১২৫ বছরের জীবদ্দশায় এ লীলাই করে গেছেন এবং মানব জাতির কল্যাণের জন্য এটাই প্রচার করে গেছেন তিনি।
সুবাস বলেন, ধর্ম মানুষকে আদর্শের শিক্ষা দেয়। আদর্শহীন জীবন মৃত্যুর সমান।
এবারের আয়োজন সম্পর্কে তিনি বলেন, রাসমেলার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে রোববার (১৩ নভেম্বর) রাত ৮টার পরে। এখানকার মন্দিরে শুরুতে শিবপূজার পরে বনদেবীর পূজা হবে।
এরপর রাত ১২টায় রাধা ও কৃষ্ণের পূজার পরে অনুষ্ঠিত হবে যজ্ঞ। প্রায় রাতভর যজ্ঞ চলার পরে ভোরে সূর্য দেবীর পূজা সেরে সাগরের পানিতে স্নান করেবন পূণ্যার্থীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৬
জেপি/এমএ