ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ঘুরে আসুন প্রত্নতত্ত্বের শহর কুমিল্লা

সাইফ সায়েম, শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৬
ঘুরে আসুন প্রত্নতত্ত্বের শহর কুমিল্লা

কুমিল্লা শহরকে প্রত্নতত্ত্বের শহর বললে ভুল হবেনা। হাজার বছরের পুরাতন এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন, স্থাপনা, পুরাকীর্তি কিংবা স্মৃতিচিহ্নের দেখা পেতে যেতে হবে কুমিল্লা।

কুমিল্লা ঘুরে এসে: কুমিল্লা শহরকে প্রত্নতত্ত্বের শহর বললে ভুল হবেনা। হাজার বছরের পুরাতন এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন, স্থাপনা, পুরাকীর্তি কিংবা স্মৃতিচিহ্নের দেখা পেতে যেতে হবে কুমিল্লা।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ঘুরে আসা হলো প্রাচীন পুরাকীর্তির শহর কুমিল্লা।

ক্লাসের ফাঁকে খানিকটা অবসর, নির্মল আনন্দ, ব্যস্ততা থেকে দূরে থাকতে আর জড়তা কাটিয়ে একটুখানি স্বস্তির খোঁজে বৃহস্পতিবার রাতে সিলেট থেকে শাবি প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের যাত্রা।

ট্রেনে করে সারারাত গল্প, আড্ডা, গান, কার্ড খেলা আর হৈচৈয়ের মধ্যে দিয়ে শুক্রবার (১১নভেম্বর) ভোররাতে পৌঁছালাম কুমিল্লা স্টেশন।

সিলেট থেকে ট্রেনে ২০০ টাকা ভাড়ায় যাওয়া যায় কুমিল্লা। স্টেশন থেকে নেমে রিকশা, টমটম আর সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে পৌঁছে গেলাম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ময়নামতির অবস্থান।

সারারাতের ভ্রমণ শেষে সেখানে ঘুম, বিশ্রাম শেষে সকালে হালকা নাশতা করেই সবাই বেরিয়ে পড়লো ময়নামতি বৌদ্ধবিহার বা শালবন বিহারের উদ্দেশে।

ময়নামতি জাদুঘর আর বৌদ্ধবিহার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই। বিশ্ববিদ্যালয় ফটক থেকে হেঁটেই আমরা রওয়ানা দিলাম ময়নামতি জাদুঘর। সঙ্গে ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) সভাপতি রাসেল মাহমুদ, যুগ্মসাম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মুসায়েবসহ অন্যান্যরা।

২০টাকা দিয়ে টিকেট কেটে জাদুঘরে হাজার বছর আগের পুরাকীর্তি, কষ্টি পাথরের মহামূল্যবান মূর্তি আর ওই সময়ের ব্যবহৃত আসবাবপত্র, স্বর্ণমূদ্রা ইত্যাদি দেখার সৌভাগ্য হলো। সেখান থেকে আমরা প্রবেশ করলাম ময়নামতি বা শালবন বৌদ্ধবিহারে।

ফলকে রক্ষিত তথ্য থেকে জানা গেল, পূর্বে ময়নামতি শালবন ‘রাজার বাড়ি’ নামে পরিচিত ছিলো। এর আসল নাম ছিলো ‘ভবদেব মহাবিহার’। খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতকের মধ্যভাগ হতে অষ্টম শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত দেব বংশের শাসকগন এ অঞ্চল শাসনকালে রাজা ভবদেব কর্তৃক এটি নির্মাণ করা হয়।

ময়নামতি বিহার থেকে সরাসরি বার্ডে গিয়ে ঘুরে দেখলাম বেশ কিছুক্ষণ। এই বার্ডেই বিখ্যাত শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘দ্বীপু নাম্বার টু’ নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানতে পারলাম। এখানেই রয়েছে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি আর নয়নাভিরাম নীলাচল পাহাড়।

নীলাচল ঘুরে আমরা গেলাম রুপবান বৌদ্ধবিহার আর ইটাখোলা বৌদ্ধবহার।  এ দু’টি মন্দিরও ৭ম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে নির্মিত হলেও খুব কম মানুষ ইটাখোলা আর রুপবান সম্পর্কে জানে। অথচ ঐতিহাসিকভাবে এ দু’টি পুরাকীর্তিও ময়নামতির মতোই সমান গুরুত্ব বহন করে।

একই শহরে এতোগুলা ঐতিহাসিক স্থাপনা দেখে নিজেদের বিমোহিত অনুভূতি প্রকাশ করে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব সভাপতি জাবেদ ইকবাল এবং সাধারণ সম্পাদক আব্বাস আলী।  

সবশেষে আমরা বাসে করে রওয়ানা দিলাম সিলেটের পথে। কিন্তু সবার মন পড়ে রইলো কুমিল্লায়, যেন হাজার বছরের পুরাতন স্মৃতিগুলি হাতছানি দিয়ে ডাকছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৬
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।