ঢাকা, সোমবার, ২০ মাঘ ১৪৩১, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

পুলিশের পদক্ষেপে কিশোর অপরাধের দৃশ্যপট বদলেছে

রীনা আকতার তুলি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪১ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৭
পুলিশের পদক্ষেপে কিশোর অপরাধের দৃশ্যপট বদলেছে রাজধানীতে কিশোরদের দ্বন্দ্বে নিহত স্কুলছাত্র আদনান ও আজিজ; ছবি-সংগৃহীত

ঢাকা: কিশোর অপরাধ ঠেকাতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা জোনের বিশেষ পদক্ষেপ সফলতার দ্বারপ্রান্তে। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে স্কুলড্রেস পরিহিত শিক্ষার্থীদের বাইরে ঘোরাঘুরি দেখলে পুলিশ তাদের আটক করতে বিশেষ অভিযান শুরু করে। এই অভিযানের পর স্কুলড্রেস পরা শিক্ষার্থীদের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বাইরে ঘোরাঘুরি করতে আর দেখা যাচ্ছে না। তবে এতে সন্তুষ্ট না থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর এখনও নজরদারি অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।

পুলিশের উত্তরা জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিধান ত্রিপুরা বাংলানিউজকে বলেন, বিশেষ অভিযানের কারণে শিক্ষার্থীদের আর স্কুল ড্রেস পরে বাইরে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে না। তবে এতে আমরা সন্তুষ্ট হয়ে বসে নেই।

  যতদিন কিশোরদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা কমে না আসে ততদিন অভিযান চলবে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ১ হাজার শিক্ষার্থীকে আটক করে অভিভাবক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে সোপর্দ করে। স্থানীয় লোকজন এবং দোকানিরা জানিয়েছেন পুলিশের ভয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুল ড্রেস পরে ‌এখন বাইরে বেরুচ্ছে না।   অভিভবকেরাও সচেতন হচ্ছেন।

পুলিশের উত্তরা জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিধান ত্রিপুরা বাংলানিউজকে বলেন, গত ৩০ জানুয়ারি কিশোর অপরাধ প্রতিরোধ ও মাদক বিরোধী সমাবেশ করা হয়। সমাবেশে স্কুল ড্রেস পরে বাইরে ঘোরাফেরা করলে শিক্ষার্থীদের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে সোপর্দ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত ৮০০ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। ফেব্রুয়ারির শেষ চারদিন এবং মার্চ মাসের প্রথম তিন দিন আরও ২০০ শিক্ষার্থীকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এরপর থেকে আর শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস পরা অবস্থায় বাইরে পাওয়া যাচ্ছে না।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ফেসবুকেও নজরদারি চলছে। পাশাপাশি সন্ধ্যার পর কিশোরদের মোটরবাইক দিয়ে মহড়া এবং দলগতভাবে আড্ডা দেওয়া বন্ধ করতে রাজধানী জুড়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এই নজরদারি অব্যাহত থাকবে।

গত ৬ জানুয়ারি উত্তরায় কিশোরদের এলাকাভিত্তিক গ্যাংয়ের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খুন হয় উত্তরার ট্রাস্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আদনান কবীর। গত ১৮ জানুয়ারি ফার্মগেটের তেজকুনি পাড়ায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে খুন হয় আব্দুল আজিজ নামের অপর এক কিশোর। এই ঘটনার পর থেকে পুলিশ নানামুখী পদক্ষেপ নেয় কিশোর অপরাধ কমাতে।

এদিকে পুলিশের এই পদক্ষেপের প্রসংশা করেছেন শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকেরা।   এ বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, পুলিশ কিশোর অপরাধ দমনে যে উদ্যোগ নিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।   তবে এতে শিশু ও অভিভাবকেরা যেন হয়রানির শিকার না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সাজ্জাদ হোসেনের বাবা আকরাম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, পুলিশের এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক। পুলিশকে আমরা প্রয়োজনে সহায়তা দেব।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৭
আরএটি/আরআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।