ঢাকা, শনিবার, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ফ্লাইওভারের গোড়া যখন ‘জংশন’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৭
ফ্লাইওভারের গোড়া যখন ‘জংশন’ ফ্লাইওভারের গোড়া যখন ‘জংশন’-ছবি-আনোয়ার হোসেন রানা

ঢাকা: দ্রুত একটা বাস ব্রেক কষে থেমে গেল আঞ্জুমান আরার সামনে। টপ করে উঠে পড়লেন তিনি। তার পেছন পেছন উঠলেন আরো কয়েকজন। দুই-তিনজন নেমেও গেলেন। এর পেছনে এসে দাঁড়ালো আরো দুটি বাস। এদের একটা আড়াআড়ি অবস্থান নিল। ব্যস রাস্তা ব্লক। বেঁধে গেল জ্যাম। মিনিট খানেকের মধ্যেই জ্যামের লেজ বিএএফ শাহীন কলেজের গেট ছাড়িয়ে গেল।

আঞ্জুমান আরা হাউজ বিল্ডিংয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন মাহাখালী ফ্লাইওভারের গোড়ায়। আর এই ফ্লাইওভারের মতো রাজধানীর প্রতিটি ফ্লাইওভারের গোড়াতেই জ্যাম এখন নিত্যদিনের সঙ্গী।

অফিস টাইমে এ পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। যার অন্যতম কারণ হচ্ছে এই অলিখিত বাস্ট স্টপেজ বা জংশন!

সরেজমিনে দেখা গেছে, গুলিস্তান, আজিমপুর, গাবতলী বা মিরপুর থেকে উত্তরাগামী বাসগুলো এসে ঠিক নিয়ম করে দাঁড়িয়ে যায় মহাখালী ফ্লাইওভাবের গোড়াতেই। বিএএফ শাহীন কলেজের একটু সামনে। যাত্রীও সব সময় অপেক্ষায় থাকে। তবে যেসব বাস ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে চলে সেগুলো তুলনামূলক কম দাঁড়ায়। কিন্তু ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে যে বাসগুলো চলে, অর্থ‍াৎ সিটিং সার্ভিস, স্পেশাল সার্ভিস বা কাউন্টারের বাসগুলোর সবগুলোই এখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করায়।  

মহাখালী ফ্লাইওভারের গোড়ায় জ্যাম-ছবি-আনোয়ার হোসেন রানাবিষয়টি অনেকটা নিয়মেই পরিণত হয়েছে। যেন বাস স্টপেজ!  এসব দেখেও যেন দেখে না কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন সকাল থেকেই এই অলিখিত বাস স্টপেজের জন্য যাত্রীদের জ্যামে পড়তে হয়। যে জ্যাম লম্বা হতে হতে অনেক সময় সরকারি কর্ম কমিশন পর্যন্ত চলে যায়।
উত্তরাগামী ভূঁইয়া, ভিআইপি, এয়ারপোর্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, ঢাকা ও বিকাশ পরিবহনসহ এমন হরেক নামের সব পরিবহনের বাসগুলোই এক। বাসগুলো আসে আর দাঁড়িয়ে গিয়ে দুইজন নামায় নয়তো তিনজন ওঠায়।

দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে কিছু যাত্রীকে আবার দেখা গেলো মহাখালী ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে যে বাসগুলো যায়, সেটা দিয়ে আসলেন। নেমেই আবার ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে যে গাড়ি চলে তাতে চড়লেন। অর্থাৎ এই ধরনের যাত্রীরা গুলশান-১ নম্বরের দিকে যাচ্ছেন। এতে অনেকটা জংশনের মতোও হয়েছে এই অলিখিত বাস স্টপেজ। রেলে যেমন একটি নির্দিষ্ট স্টপেজ বা স্টেশন থেকে গন্তব্য রুট ভাগ হয়ে যায়, ঠিক তেমন।  

দেখা গেল, বিএএফ শাহীন কলেজের গেটের কাছেই ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে ট্রাফিক পুলিশের রে-কার। কিন্তু কোনো পুলিশ সদস্যকে দেখা গেলো না। কোনোদিন বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটিও (বিআরটিএ) এই অবৈধ স্টপেজ বানিয়ে ফেলার অভিযোগে কাউকে শাস্তির আওতায় এনেছে এমনটিও শোনা যায়নি।
এ বিষয়ে বিআরটিএ’র উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এ ধরনের অভিযোগ কেউ কখনো আমাদের কাছে করেননি। করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হতো। তবে আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত রয়েছে। তাদের মাধ্যমে বিষয়টি দেখা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৭
ইইউডি/আরআর/বিএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।