আসামিরা হলেন, মিরপুরের ‘শাহ আলী নগর হাউজিং এস্টেট’র মালিক শমসের আলী ও জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর (অবসরপ্রাপ্ত) মো. নুরুজ্জামান।
মঙ্গলবার ( ৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুর থেকে তাদের গ্রেফতার কনে দুদক।
দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বাংলানিউজকে জানান, দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১-এর সহকারী পরিচালক মো. আবদুল ওয়াদুদ তাদের গ্রেফতার করেন।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাজধানীর দারুস সালাম থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে দুদক। মামলার আরেক আসামি মিরপুরের তৎকালীন সাব-রেজিস্ট্রার মোখলেসুর রহমান ঠাকুর।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর বিশিল মৌজার খতিয়ান নম্বর ১১৯, ১০৬, ১৬১ ও ২৮৬-এর ৫১, ৫২, ৭৬ ও ৮১ নম্বর দাগে ৪ দশমিক ২৬৬৬ একর (২৫৮ দশমিক ৫৮ কাঠা) জমি ১৯৬০ সালে তৎকালীন গৃহায়ণ অধিদপ্তর অধিগ্রহণ করে (এল.এ. কেসনম্বর-১৩/১৯৫৯-৬০)। ১৯৮০ সালের ১৮ ডিসেম্বর এ বিষয়ে গেজেট নোটিফিকেশন করে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। রাজধানীর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদিত নকশা ও সুপার ইম্পোজ নকশা অনুযায়ী এ সম্পত্তিতে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের জমি ও ডুইপ প্রকল্পের বিভিন্ন প্লট রয়েছে। এ সম্পত্তি কাউকে ইজারা কিংবা বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে ২০০০ সালের ২০ এপ্রিল এ সম্পত্তির ইজারা দলিল (দলিল নম্বর ২১১৭/২০০০) করে নেন মিরপুরের বিশিল এলাকার শরাফত আলীর ছেলে শমসের আলী। দলিলে ৯৯ বছরের জন্য ৪ একর জমির সেলামি দেখানো হয় মাত্র ৬৪ হাজার টাকা। অথচ গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ এ সম্পত্তি লিজ বরাদ্দ দেয়নি। গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের পক্ষে সংস্থাটির তৎকালীন অফিস সহকারী কাম ডেটা এন্ট্রি অপারেটর মো. নুরুজ্জামান ‘দলিল বাহক’ হিসেবে ওই দলিলে সই করেন। কিন্তু দলিল সই করার জন্য গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নুরুজ্জামানকে কোনো ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে মিরপুরের তৎকালীন সাব-রেজিস্ট্রার মোখলেসুর রহমান ঠাকুর জমির মৌজা মূল্যের চেয়েও কম দেখিয়ে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি করেছেন। এত বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি কোনো ব্যক্তিকে ইজারা দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও তিনি অন্যদের যোগসাজশে তা করিয়েছেন। ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তিনি নিজ বা অন্যের স্বার্থে বিনা যাচাইয়ে ওই সম্পদ জালিয়াতিতে শমসের আলীকে সহায়তা করেন।
অপরদিকে ভুয়া ইজারার বরাদ্দপত্র দেখিয়ে ওই সম্পত্তির ওপর ‘শাহ আলী নগর হাউজিং এস্টেট’ সাইনবোর্ড টানিয়ে প্লট বিক্রি করে এই চক্র। এসব প্লটের ওপর এখন গড়ে উঠেছে উপশহর। অর্ধশত প্লটের ওপর ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে। আর এ এলাকা এখন পরিচিত ‘শাহ আলীনগর হাউজিং এস্টেট’ নামে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, ৪ এপ্রিল,২০১৭
এসজে/এসএইচ