ঢাকা, শনিবার, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

রাওদার কক্ষ দেখলেন মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৭
রাওদার কক্ষ দেখলেন মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তা

রাজশাহী: ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ কন্যা রাওদা আতিফের কক্ষ পরিদর্শন করেছেন মালদ্বীপ থেকে আসা দুই পুলিশ কর্মকর্তা। মঙ্গলবার (০৪ এপ্রিল) দুপুরে তারা রাজশাহীর নওদাপাড়ায় ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত তারা ওই কলেজেই অবস্থান করেন।

এ সময় রাওদা আতিফের কক্ষটি নিবিড়ভাবে পরিদর্শন করেন তারা। পরে কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নজরুল ইসলাম, হোস্টেল সুপার মাহমুদা বেগম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবদুল আজিজ রিয়াজ ও রাওদার সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলেন কর্মকর্তাদ্বয়।

সেখান থেকে তারা আবার রাজশাহী সার্কিট হাউজে ফিরে যান। এর আগে সকালে তারা মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তারা রাওদার মরদেহ উদ্ধার, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আত্মহত্যার আলামত , মরদেহ থেকে ভিসেরা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করেন।     

তবে দিনভর তদন্ত কার্যক্রম চালানোর ব্যাপারে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। রাওদার মৃত্যু এবং তদন্তের বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশই যা বলার বলবে-তারা আপাতত কিছু বলবেন না বলেও জানান তারা।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী কমিশনার (সদর) ইফতে খায়ের আলম বাংলানিউজকে জানান, মালদ্বীপের ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা সকালে প্রথমে মহানগর পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর তারা দুপুর একটার দিকে ঘটনাস্থল রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজে যান। সেখানে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত অবস্থান করেন।  

রাজশাহীর শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তা স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রায় ২০ মিনিট রাওদার কক্ষে অবস্থান করেন। এ সময় তারা ঘটনাস্থলের বিভিন্ন আলামতের ছবি তোলেন। এমনকি দরজা কিভাবে ভাঙা হয়েছিল তাও ভালো করে আবার জানতে চান।  

ওসি জিল্লুর রহমান আরও বলেন, মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনাটি তদন্ত করছেন না। তারা এসেছেন মালদ্বীপের অন্য যেসব শিক্ষার্থী আছেন, তাদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে, এখানকার পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝতে এসেছেন। রাওদার আত্মহত্যার ঘটনাটি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিতে এসেছেন। তারা প্রকৃত ঘটনাটি জানতে চান।

মডেল তারকা রাওদা আতিফের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে গতকাল সোমবার (০৩ এপ্রিল) বিকেলে রাজশাহীতে পৌঁছান মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তা।

তারা হলেন- মালদ্বীপ পুলিশের অতিরিক্ত সিনিয়র পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রিয়াজ ও সিনিয়র পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) আহম্মেদ আলী। গতকাল বিকেলে প্লেনে করে তারা ঢাকা থেকে রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দরে পৌঁছান।

এর আগে গত ২৯ মার্চ রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের মহিলা হোস্টেলের ২০৯ নম্বর কক্ষ থেকে রাওদা আতিফের (২০) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ৩১ মার্চ দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি টিম তার মরদেহের ময়নাতদন্ত করে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাওদা আত্মহত্যা করেছেন। গলায় ফাঁস দেওয়ার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া কোনো আলামত মেলেনি।

পরে ১ এপ্রিল দুপুর সোয়া ২টার দিকে মহানগরীর হেতমখাঁ গোরস্থানে তার দাফন কাজ শেষ করা হয়। এ সময় পরিবারের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১৩তম ব্যাচের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন রাওদা। বিদেশি কোটায় ভর্তির পর গত বছরের ১৪ জানুয়ারি মহিলা হোস্টেলের ২য় তলার ওই কক্ষে ওঠেছিলেন রাওদা। ওই ব্লকে আরও ১৪জন বিদেশি ছাত্রী থাকেন। তিনি এক সময় প্রখ্যাত ভোগ ম্যাগাজিনের মডেল হয়েছিলেন শখের বশে।

শিক্ষার টানে মালদ্বীপ থেকে বাংলাদেশে এসে ভর্তি হয়েছিলেন এ মেডিকেল কলেজে। লেখাপড়ার পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগে সার্টিফিকেট কোর্সও করছিলেন রাওদা। কিন্তু অস্বাভাবিক এই মৃত্যুর কারণে তা শেষ করে যেতে পারেননি তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৭
এসএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।