ঢাকা, সোমবার, ২৭ মাঘ ১৪৩১, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বৈশাখের আয়োজনে কুমারপাড়ায় ব্যস্ততা

মাহিদুল ইসলাম রিপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৭
বৈশাখের আয়োজনে কুমারপাড়ায় ব্যস্ততা বৈশাখের আয়োজনে কুমারপাড়ায় ব্যস্ততা

দিনাজপুর: চাকা ঘুরিয়ে মৃৎ শিল্পীরা তাদের নিপুণ হাতে তৈরি করছেন ফুলদানি, ব্যাংক, পুতুল, গরু, হাতি, ঘোড়া, পাখিসহ না‍না বাহারি সামগ্রী। কেননা দুয়ারে এসে গেছে বাংলা নববর্ষের প্রথম মাস বৈশাখ।

বৈশাখ এলেই কদর বাড়ে মৃৎ শিল্পীদের মাটির তৈরি বিভিন্ন বস্তুসামগ্রীর। বর্ষবরণ উৎসব ও বৈশাখী মেলাকে সামনে রেখে ত‍াই ব্যস্ত সময় পার করছেন দিনাজপুর শহরের কুমারপাড়া এলাকার মৃৎ শিল্পীরা।

মাটি দিয়ে তৈরি সকল সামগ্রী প্রস্তত করে রংতুলির শেষ আঁচড় দিয়েই পাঠানো হবে জেলার বিভিন্ন মেলায়। যা মেলায় সাজিয়ে বিক্রি হবে। বৈশাখী মেলায় মৃৎ শিল্পীদের তৈরি দৃষ্টিনন্দন সামগ্রী ছোট-বড় সকল বয়সের মানুষকেই সমানভাবে আকৃষ্ট করে।

দিনাজপুর শহরের কুমারপাড়া এলাকার মৃৎশিল্পী মহেন্দ্র পাল বাংলানিউজকে বলেন, মৌসুম এলেই মাটির তৈরি সামগ্রীর কদর বাড়ে। এছাড়া সারা বছর এর চাহিদা তেমন থাকে না। মাটি ও জ্বালানি খড়ির দাম বেশি হওয়ায় আমাদের খরচ বেশি হচ্ছে। বর্তমানে বাজারজুড়ে বিভিন্ন কাঠ ও প্লাস্টিকের পণ্য সস্তায় বাজারজাত হওয়ার কারণে মাটির তৈরি পণ্যের চাহিদা কমে গেছে।
বৈশাখী মেলার জন্য মৃৎশিল্পীদের তৈরি সামগ্রী
তিনি বলেন, বৈশাখ মাস এলে জেলার বিভিন্ন স্থানে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এসব মেলায় মাটির তৈরি সামগ্রীর চাহিদা থাকে। এ সময় বিক্রিও হয় ভালো। তাই পুরুষের পাশাপাশি বাড়ির নারী সদস্যরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মাটির পণ্য তৈরিতে। বৈশাখ মাস জুড়েই তৈরি হবে মাটির বিভিন্ন সামগ্রী। পহেলা বৈশাখের উন্মাদনায় অংশ নিতে এরইমধ্যে তৈরি হয়েছে অনেক সামগ্রী। এখন সেগুলোতে চলছে রংতুলির আঁচড়ের কাজ। শেষ তুলির আ‍ঁচড়ের পরই মেলায় সরবরাহ করা হবে মাটির সামগ্রী। এরই মধ্যে কিছু মাল প্রস্তুত হয়ে গেছে বাকিটা শিগগিরই সম্পন্ন করে মেলায় তোলা হবে।

একই এলাকার মৃৎশিল্পী অভিজিৎ রায় বলেন, মাটির তৈরি সামগ্রী তৈরি করতে প্রয়োজন এঁটেল মাটির। এই এঁটেল মাটি পাওয়া অনেকটা দুষ্কর। ফলে অতিরিক্ত মূল্যে মাটি কিনে তৈরি করতে হচ্ছে মাটির সামগ্রী। বর্তমানে আমাদের পেশা মেলাকেন্দ্রিক। তাই সারা বছর বসে থাকতে হয়। লোকসান গুণতে হয়। এজন্য অনেকেই পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। কুমারপাড়া এলাকায় গত এক যুগ আগেই পেশাদার ২১টি মৃৎশিল্পী পরিবার ছিল। যা কমে পূর্ব পুরুষের পেশা ধরে রেখেছে বর্তমানে মাত্র ৬টি পরিবার।

মৃৎশিল্পের এই সংকটকালেও শিল্পীরা আশা করছেন অনান্য বছরের মতো এবারও পহেলা বৈশাখে তাদের ব্যবসা ভালো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৭
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।