কারণ হিসেবে দেখা গেছে, রাতে অধিকাংশ চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (ওয়ার্ড বয়, নাইট গার্ড) গভীর ঘুমে থাকেন। তাদের পরিবর্তে যারা দায়িত্ব পালন করেন তারা অধিকাংশই ‘কন্ট্রাক্ট’-এ সেবা দিয়ে থাকেন।
দুর্ঘটনায় আহত ষাটোর্ধ্ব আসমা খাতুন মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালে আসেন। জরুরি বিভাগ থেকে তাকে ওয়ার্ডে আসতে তার স্বজনদের গুনতে হয়েছে হয়েছে ১শ টাকা। যেনো সিঁড়ি গুনে গুনেই টাকা নিয়েছেন কন্ট্রাক্ট সার্র্ভিসদাতারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাতে হাসপাতালের অধিকাংশ চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পরিবর্তে ‘বহিরাগত’রা টাকার বিনিময়ে দায়িত্ব পালন করেন। ফলে রোগী ওঠানো-নামানো, মরদেহ ওয়ার্ড থেকে বাইরে বের করাসহ সব কাজেই টাকা গুনতে হয়। হাসপাতালের এই বহিরাগতদের সেবাকে ‘কন্ট্রাক্ট সার্ভিস’ বলা হয়।
বর্তমানে খুমেকে সিদ্দিক, জাহাঙ্গীর, ইসলাম, আসলাম, নাসির, কালাম, ইউসুফ, রেক্সোনা, সালেহাসহ অন্তত অর্ধশত নারী-পুরুষ ‘কন্ট্রাক্ট সার্ভিস’ দিয়ে থাকেন। এছাড়াও কিছু কিছু ওয়ার্ডে ডিউটির কাজও করে বহিরাগতরা, ফলে মাঝে মধ্যে রোগীর মোবাইল ফোন, টাকা, ঔষুধ চুরির মতো ঘটনা ঘটে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বিভাগীয় শহর খুলনার একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র এই খুমেক। যেখানে ৫শ আসনের বিপরীতে গড়ে প্রতিদিন আট শতাধিক রোগী ভর্তি থাকেন। রাত-দিন সমানতালে আসতে থাকেন রোগী। আর এসব বিপদগ্রস্ত সাধারণ মানুষের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে অর্থ হাতিয়ে নিতে গড়ে উঠেছে একটি চক্র।
চক্রটি ‘মানুষ মানুষের জন্য’ বুলি আওড়িয়ে রোগী বা রোগীর স্বজনদের চিনিয়ে দেয় হাসপাতালের বাইরের ফার্মেসি, ডায়াগনস্টিক সেন্টার অথবা ক্লিনিক। পরে পকেট কাটা পড়ে সহজ-সরল বিশ্বাসী মানুষটির। রাতের অন্ধকারে এই প্রতারণা বেড়ে যায় বহুগুণ।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৭
ইউজি/এসএনএস
আরও পড়ুন
** জীবনচক্র তাদের আহ্নিক গতির পাল্টাসূত্রে
** আলোকচিত্রে রাতের খুলনা
** কদমতলা বাজারে রাতের কর্মযজ্ঞ যোগায় দিনের খোরাক
** রাতের খুলনার খানাপিনা
** রাতদুপুরে অক্সিজেনই মৃত্যুফাঁদ খুমেকের
** রাত ১০টার পর সন্ধ্যা নামে কুয়েটের হলে!
** ভূতের বাড়ি থেকে ভেসে আসে শীলার হাসি-কান্না!
** রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্ম যখন ঘুমরাজ্য!
** আড্ডা জাগিয়ে রাখে খুলনার সাতরাস্তা মোড়
** চোখ রাখুন খুলনার রাতে